চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: স্বামী-শ্বশুরবাড়ির কেউই খোঁজ রাখেন না। লাঞ্ছনা গঞ্জনা সহ্য করে থাকতে হয় বাপের বাড়ি। তার ফলে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন দুই কন্যাসন্তানের মা। আর তার জেরেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন গৃহবধূ। গায়ে আগুন লাগিয়ে সন্তান-সহ আত্মঘাতী হলেন তিনি। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) কান্দির গাঁতলার ঘটনায় শোকের ছায়া।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত গৃহবধূ মুর্শিদাবাদের কান্দির গাঁতলা গ্রামের দয়াল ঘোষের মেয়ে লক্ষ্মী ঘোষ। পাঁচ বছর আগে নবগ্রামের ঘোষপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বীরবল ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। দু’টি কন্যাসন্তানও ছিল তাদের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয় লক্ষ্মীর। সে কারণে লক্ষ্মী দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন। মাঝেমধ্যে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেছিলেন ওই গৃহবধূ। তবে লক্ষ্মীর স্বামী কিংবা শ্বশুরবাড়ির কেউই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন না। তার ফলে মানসিক অবসাদেই ভুগছিলেন ওই গৃহবধূ।
[আরও পড়ুন: টি-২০ ক্রিকেটকে খুন করছেন রোহিত, শুভমনদের মতো ওপেনাররা! বিস্ফোরক গেইল]
রবিবার সকালে অনেক বেলা হলেও লক্ষ্মী কিংবা তাঁর দুই মেয়ের কোনও সাড়াশব্দ পাননি প্রতিবেশীরা। আচমকাই বৃন্দাবন সাহা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা দেখতে পান, ওই গৃহবধূর বাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ঘরের ভিতর থেকে লক্ষ্মী এবং তাঁর দুই সন্তানের চিৎকারের শব্দও পান প্রতিবেশীরা। শব্দ পাওয়ামাত্রই দৌড়ে যান তিনি। তবে সেই সময় গৃহবধূর ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। ভিতরে আগুন জ্বলছে বুঝতে পারায় প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন।
তবে দরজা ভাঙার পর তাঁরা আঁতকে ওঠেন। ঘরের ভিতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় লক্ষ্মী, তাঁর বড় মেয়ে চাঁদনি এবং ছোট্ট মেয়ে ইতুকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর দেওয়া হয় কান্দি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকে উদ্ধার করে। ততক্ষণে সকলেরই মৃত্যু হয়েছে। ওই তিনজনের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। মানসিক অবসাদে নিজের সন্তানদের নিয়ে মহিলা আত্মঘাতী (Suicide) হয়েছেন বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। তবে তদন্তকারীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।