দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে মেঝেতে ফেলে খুন করল তার মাসি। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কী কারণে নিজের বোনের সন্তানকে খুন করল মহিলা, তা এখনও জানা যায়নি। কন্যাসন্তান হওয়ায় খুন নাকি অন্য কিছু তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির পূর্ব ঝুপখালি গ্রামের বাসিন্দা বাসন্তী সর্দার। শুক্রবার রাতে প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। তড়িঘড়ি তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। রবিবার রাতে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। চিকিৎসকদের দাবি, কন্যাসন্তান জন্মের পর সুস্থ ছিল। এরপর নির্দিষ্ট নিয়মানুযায়ী কন্যাসন্তান এবং প্রসূতিকে হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডের বেডে দিয়ে দেন নার্সরা। কিন্তু বাসন্তী দেবী অস্ত্রোপচারের পর কিছুটা অচৈতন্য অবস্থায় ছিলেন। ওই মহিলা অচৈতন্য থাকার কারণে একজন বাড়ির লোককে সঙ্গে থাকতে বলেন চিকিৎসকরা। মহিলা ওয়ার্ড তাই মহিলাদের শুধুমাত্র থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। তাই বাসন্তীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর দিদি মালতী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, “রাতে শিশুটি তাঁর মায়ের কোলে ছিল। পাশে বসেছিলেন ওই মহিলা। তারপর একটা আওয়াজ শুনতে পাই। দেখি শিশুটি মেঝেতে পড়ে ছটফট করছে। মাথা দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছিল। এরপর আমরা চিৎকার করি। নার্স ও ডাক্তারেরা চলে আসেন। কিন্তু মহিলা চুপ করে হাসপাতালের বেডে বসে ছিল। খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসেন বাসন্তীর পরিজনেরা। এরপর মালতি সর্দারকে গ্রেপ্তার করে ক্যানিং থানার পুলিশ। কী কারণে শিশুকন্যাকে আছড়ে মারল ওই মহিলা, সে বিষয়ে মুখে কুলুপ অভিযুক্তের।
[আরও পড়ুন: জঙ্গল থেকে তরুণীর নগ্ন দেহ উদ্ধার, তদন্তে ‘নিষ্ক্রিয়’ পুলিশ]
কন্যাসন্তান জন্মে আপত্তি থাকার জেরে কি এই ঘটনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বাসন্তী স্বামী কৃষ্ণ সর্দার বলেন, “আমাদের প্রথম সন্তান মেয়ে। দ্বিতীয়বারও কন্যাসন্তান জন্মানোয় আমার কোনও অসুবিধা নেই। এ নিয়ে আমার কিংবা স্ত্রীর কোনও আক্ষেপ নেই।” কিন্তু কেন হঠাৎ করে মহিলার দিদি এমন কাণ্ড ঘটাল তা বুঝতে পারছেন না নিহত শিশুকন্যার বাবা। কন্যাসন্তানকে এইভাবে আছড়ে মারার ঘটনায় হতবাক তার মা। ঘটনার আকস্মিকতায় বাকশক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
The post অমানবিক! সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে আছড়ে মারল মাসি appeared first on Sangbad Pratidin.
