ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: রাজনৈতিক সংঘর্ষে বোমাবাজির মাঝে পড়ে চোখ হারালেন ভাটপাড়ার এক যুবক। স্প্লিন্টারের ঘায়ে চোখে গুরুতর চোট পান ফিরোজ নামে ওই যুবক। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একটানা চিকিৎসাতেও লাভ হয়নি। পরিবর্তে একটি হারিয়ে নকল চোখ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হল তাঁকে। সেলুনে কাজ বাবা, মা, বোনের অন্নসংস্থান করতেন ফিরোজ। চোখ হারানোর পর তাঁর পক্ষে আর সেলুনে কাজ করা সম্ভব নয়। কীভাবে সংসার চালাবেন সেই চিন্তা গ্রাস করেছে ওই যুবক এবং তাঁর পরিজনদের।
গত ২৬ জানুয়ারি তৃণমূল ও বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া। আচমকাই শুরু হয় বোমাবাজি। তারই মাঝে পড়ে যান ফিরোজ নামে এক যুবক। বোমার ঘায়ে চোখে গুরুতর আঘাত পান তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে ভাটপাড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে নদিয়ার কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই হাসপাতালে মেলেনি উপযুক্ত চিকিৎসা। তাই তাঁকে বাইপাসের এক নার্সিংহোম হয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, ততদিনে স্প্লিন্টারের খোঁচায় তাঁর চোখের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হয়ে যায়। তাই চোখ বাদ দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না তাঁদের। বাধ্য হয়ে চিকিৎসকরা ফিরোজের একটি চোখ বাদ দেয়। সেখানে বসিয়ে দেওয়া হয় নকল চোখ। হাসপাতাল থেকে শনিবার বাড়িতে ফিরেছেন ওই যুবক। মা, বাবা, বোন ছাড়া আর কেউ নেই তাঁর। ফিরোজ একটি সেলুনে কাজ করেন। পরিবারের রুটি রোজগারকারী একমাত্র ওই যুবক। রাজনৈতিক অশান্তির জেরে চোখ হারানোর পর আর কিছুতেই তাঁর পক্ষে সেলুনে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই কীভাবে আর সংসারের দায়িত্ব সামলাবেন, সেই চিন্তাই রাতের ঘুম কেড়েছে তাঁর।
[আরও পড়ুন: কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খুনে বিজেপি সাংসদকে জেরা CID’র]
তবে এই ঘটনার পরেই ভাটপাড়ায় অশান্তি রোখা সম্ভব হচ্ছে না। শুক্রবার গভীর রাতেও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রামনগর কলোনিতে বিজেপি কর্মী রাজ বিশ্বাসের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে একদল দুষ্কৃতী। পরপর দু’টি বোমার ঘায়ে ওই বিজেপি কর্মীর বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে আক্রান্ত হন পুলিশকর্মীও। তৃণমূল কর্মীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলেই অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
The post রাজনৈতিক সংঘর্ষে ভাটপাড়ায় বোমাবাজি, চোখ হারালেন নিরীহ যুবক appeared first on Sangbad Pratidin.
