সুব্রত যশ, আরামবাগ: মৌলবাদী মতাদর্শে দীক্ষিত হয়ে ছেলে বাড়ি ছেড়েছে অনেক আগেই। তার গ্রেপ্তারির খবর লোকমুখে শোনার পর থেকেই নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না আরামবাগ থানার আরণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের সামতার বাসিন্দা কাজি সফিউল্লা। আল-কায়দার (Al-Qaeda) সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার শাসন থানার খড়িবাড়ি থেকে তাঁরই ছেলে কাজি আহসানউল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে এসটিএফ (STF)। তারপর থেকে প্রতিবেশীদের রকমসকমও যেন পালটে গিয়েছে। সকলেই এড়িয়ে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
ছেলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার (UAPA) অভিযোগ উঠেছে, এই কথা জেনেই বাড়ি থেকে বেরনো প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে আহসানউল্লার পরিবারের সদস্যদের। পাছে কেউ বাঁকা কথা শোনায়! কিন্তু, তাঁরা কেউই অবশ্য মানতে রাজি নন যে তাঁদের পরিবারের ছেলে এমন কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারে। এদিকে, আহসানউল্লার গ্রেপ্তারির পর থেকে সতর্ক হয়ে গিয়েছে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনও। শুক্রবার সকাল থেকে আরামবাগ (Arambag)মহকুমা পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকাজুড়ে প্রচার চালানো হয়। পাড়ায় নতুন কেউ বাড়ি ভাড়া নিলে বাড়ির মালিককে ভাড়াটের সচিত্র পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলকভাবে নেওয়ার কথা বলা হয় এবং সেই পরিচয়পত্রের কপি যেন অতি অবশ্যই স্থানীয় থানাকে জানানো হয়, সে কথাও জানান তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ‘তদন্তে অসহযোগিতা করিনি’, যাদবপুরের ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাবি মানিকের]
আহসানউল্লার বাবা, মা, কাকারা একবাক্যে বলছেন, যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে যেন তার কঠোর শাস্তি হয়। নিজের ইচ্ছেমতো বিয়ে করেছিল আহসানউল্লা। কখনও হাওড়ায়, কখনও উত্তর ২৪ পরগনায় থাকত। বাড়ির কারও সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগও ছিল না। সেভাবে কারও সঙ্গে কথাও বলত না সে।
[আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা! দিল্লিতে শোয়ের অনুমতি পেলেন না কমেডিয়ান ফারুকি]
এ সমস্ত কিছু দেখেও কি কিছুই আন্দাজ করতে পারেননি তাঁরা? এই প্রশ্নের জবাবে তার পরিবারের সদস্যরা জানালেন, সারাক্ষণ পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকত আহসানউল্লা। তার বাবা কাজি সফিউল্লা জানান, ‘‘আমি বর্ধমানের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করি। ছেলের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ নেই। ছেলে কোথায় কী করছে, তাও জানি না।’’ মা ফরিদা বিবি বলেন, ‘‘ছেলে ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিল। কার পাল্লায় পড়ে এরকম দেশদ্রোহিতার কাজ করতে গেল, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’