রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: 'বাবা-মা আমার বিয়ের জন্য ব্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। আমি বিয়ে করতে চাই না। আমার বাবা-মাকে বুঝিয়ে আমার খেলোয়াড় জীবন রক্ষা করুন। আমি দেশের জন্য খেলতে চাই।' সোমবার সটান জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসারের কাছে গিয়ে এই আবেদন জানাল জাতীয় স্তরের অ্যাথলিট এক নাবালিকা। ওই নাবালিকার এই আবেদনে বিভিন্ন মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, নাবালিকা আলিপুরদুয়ার পুরসভার আশুতোষ কলোনির বাসিন্দা। বয়স ১৭। আলিপুরদুয়ার গার্লস হাইস্কুল থেকে সামনের বছর সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ২০২৩ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত প্রতিযোগিতায় স্টিপলচেজ রান বিভাগে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয় সে। তার পর জাতীয় স্তরে অ্যাথলেটিক ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া আয়োজিত প্রতিযোগীতায় ওই বিভাগেই গোটা দেশে দ্বীতিয় হয় সে। এহেন প্রতিভাবান অ্যাথলেটিকের এই আবেদনে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নাবালিকার আইডল ‘সোনার মেয়ে’ স্বপ্না বর্মন। স্টেডিয়ামে দেশের জার্সি নামার স্বপ্ন। সে বলে, "গায়ে আমি দেশের জন্য খেলতে চাই। আমাদের আর্থিক অবস্থা দুর্বল। সেই কারণে বাবা-মা দ্রুত বিয়ে দিতে চাইছেন। আমি বিয়ে করব না। আমি দেশের জন্য খেলব। সেই কারণে এমন আবেদন জানিয়েছি।"
বিষয়টি নিয়ে হইচই হতেই প্রতিভাবান এই অ্যাথলেটিকের মা নিশা বর্মন বলেন, "আমরা ওর সম্বন্ধ দেখছিলাম। ও বিয়ে করতে চাইছে না। কোনও অসুবিধা নেই। ওর জন্য আর পাত্র দেখব না।" ওই খেলোয়াড়ের কোচ পরাগ ভৌমিক বলেন, "মেয়েটি অত্যন্ত প্রতিভাবান। দেশের নাম উজ্জ্বল করার প্রতিভা রয়েছে ওর মধ্যে। ও আমাকেও বিষয়টি জানিয়েছিল। ও যেন খেলতে পারে, তার ব্যবস্থা করা উচিত।" বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। জেলা শিশু সুরক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই খেলোয়াড়ের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে বোঝানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।