shono
Advertisement

‘মৃত্যু’র ৭ বছর পর গ্রামের বাড়িতে ‘সাহেব’! প্রোমোটার অমৃতাভর রহস্যভেদের গল্পে অবাক মন্তেশ্বরবাসী

গ্রামের বাড়িতে ফিরেই প্রোমোটারি ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল জ্ঞানেশ্বরীর কাণ্ডে 'মৃত' অমৃতাভ।
Posted: 07:20 PM Jun 20, 2021Updated: 07:53 PM Jun 20, 2021

অভিষেক চৌধুরী,কালনা: ‘মৃত্যু’র সাত বছর পার করে প্রথম দেশের বাড়িতে পা রেখেছিল অমৃতাভ চৌধুরী। বছর চারেক আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের বামুনপাড়ার পৈতৃক বাড়িতে অমৃতাভ ওরফে সাহেব যখন এসে দাঁড়ায়, তখন তাকে দেখে আঁতকে উঠেছিলেন আত্মীয়স্বজনরা। কারণ, রেল দপ্তরের নথিতে তখন তিনি মৃত। জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে দেহ। তাই সে যে হঠাৎ করে এসে তাঁদের সামনে ‘মূর্তিমান’ হয়ে দাঁড়াবে, সে কথা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। সেই থেকেই এলাকায় শুরু হয়ে যায় গুঞ্জন। পাড়ার ঠেকে, চায়ের ঠেকে তাকে নিয়ে জোর চর্চা চলতে থাকে। তারপর শুক্রবারই সবটা প্রকাশ্যে আসে। নথি জাল করে ‘মৃত’ সেজে সরকারি ক্ষতিপূরণ হাতিয়ে নেওয়া ব্যক্তিটিকে আটক করেছে সিবিআই (CBI)। এই অবস্থায় পুরনো কথা মনে পড়ছে মন্তেশ্বরবাসীর।

Advertisement


বিমা কোম্পানির টাকা, ক্ষতিপূরণ থেকে রেলের চাকরি – সমস্ত সুবিধা হাতিয়ে নেওয়ার পরেও শেষ রক্ষা হয়নি অমৃতাভ চৌধুরী ও তার পরিবারের। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ঘটনার রহস্য ফাঁস হতেই তাকে আটক করে সিবিআই। অভিযুক্ত অমৃতাভ চৌধুরীর আসল বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার বামুনপাড়া গ্রামে। মন্তেশ্বরের কামারশাল মোড়ে সম্প্রতি তাঁর তৎপরতাতেই প্রাসাদোপম একটি বাড়ি নির্মাণের কাজও চলছে। শুধু তাই নয়, সেই বাড়িটি তৈরি করে একেকটি ঘর মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রিও করছেন বলে জানান স্থানীয়রা। মোটা টাকার বিনিময়ে অমৃতাভর বাবা মিহির চৌধুরীর কাছ থেকে সেই আবাসনের ঘর এক বছর আগে ব্যবসা করার জন্য কিনেছিলেন বলে জানান ভারুছা গ্রামের বাসিন্দা বাবুল ঘোষ, অরূপ ঘোষ, মন্তেশ্বরের সুমন দত্তরা।

[আরও পড়ুন: রাজ্যে নিম্নমুখী মৃত্যু, দৈনিক করোনা সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা]

স্থানীয়দের অনুমান, মিথ্যা তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটা টাকা পাওয়ার পর প্রোমোটারি ব্যবসায় নেমেছিলেন অমৃতাভ চৌধুরী।‘সাহেব চৌধুরী’ নামে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ওই আবাসন তৈরির তৎপরতায় তাঁকে ছবিতেও দেখতে পাওয়া যায়। মন্তেশ্বর এলাকায় দু’-তিন বছর ধরে তাঁর অবাধ যাতায়াতও শুরু হয়। সেখানেই থাকা তাঁর মাসির বাড়ি ও মামার বাড়িতে। কিন্তু তাতে কী? তাঁকে দেখে চক্ষু চড়কগাছ হলেও সেই রহস্য জানার উপায় কারও নেই। ততক্ষণে ওই এলাকাতেই বেশ কিছু যুবকের সঙ্গে তাঁর শুরু হয়েছে ওঠাবসা, অন্তরঙ্গতা। তাঁর চালচলন, আদবকায়দা, ঠাঁটবাটও ছিল ধনীদের মতো।

[আরও পড়ুন: ধারাবাহিকভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা-গয়না চুরি! পুলিশের জালে ইংরাজিতে MA পাশ যুবক]

স্থানীয়দের দাবি, প্রতিদিনের হাতখরচও ছিল বেশ কয়েক হাজার টাকা। মন্তেশ্বরের কয়েকটি দোকানে তাঁর ধারবাকির হিসাবে তা আরও স্পষ্ট হয়। সাহেবের মৃত্যু ও তার ফিরে আসার রহস্য কেউ জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলেও তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যান্য সঙ্গীসাথীরা তা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করত। শুধু তাই নয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্তেশ্বর ও আসানপুর গ্রামে থাকা আত্মীয়দেরও দাবি, আসল ঘটনা কী, সেই বিষয়ে অমৃতাভর বাবা মিহির চৌধুরী ও মা অর্চনা চৌধুরী কোনওভাবেই প্রকাশ্যে আনতেন না। পাশাপাশি ছেলেকেও যেন ওই বিষয়ে কেউ জিজ্ঞাসা না করে সেই বিষয়েও তাদের সচেতন করে দেওয়া হোতো। তাই এতদিন এই ঘটনার রহস্যভেদ করা কারও পক্ষেই সম্ভব হয়নি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার