সৈকত মাইতি, তমলুক: তৃণমূল নেতা কোরবান শাহ খুনে জামিন পেলেন পাঁশকুড়ার বিতর্কিত বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান (Anisur Rahman)। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। জেলমুক্তি এবার সময়ের অপেক্ষা।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর। নবমীর রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের মাইশোরা বাজারে দলীয় কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের অতর্কিত আক্রমণে খুন হন পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূলের কার্যকারী সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কোরবান শাহ। কিন্তু পার্টি অফিস বা বাজারে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয় পুলিশকে। আর এই সুযোগেই নিশ্চিন্তে পালিয়ে বেড়ায় অভিযুক্তরা। ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগের আঙুল ওঠে পাঁশকুড়ারই বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের দিকে। নিহত নেতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সিট গঠন করে রাজ্য ছাড়িয়ে একাধিক স্থানে তল্লাশি অভিযানে নামে জেলা পুলিশ। গ্রেপ্তার হয় মহম্মদ খালেক, মলয় ঘোষ, দীপক চক্রবর্তী, নবারুন মিশ্র, নিশিথ পাল নামে পাঁশকুড়ার মাইশোরা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার হয় খড়গপুরের সুপারি কিলার তসলিম আরিফ ওরফে রাজা। সাগরেদ ও সহযোগীদের একের পর এক গ্রেপ্তারের খবর পেয়েও বেশ কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিলেন আনিসুর রহমান। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে।
পরবর্তীতে কোরবান খুনের মামলা থেকে বাকি অভিযুক্ত-সহ আনিসুরকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তমলুক আদালতে রাজ্য সরকারের এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়। রাজ্যের সুপারিশ মেনে আনিসুরকে রিলিজ দেন তমলুকের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক। বিষয়টি জানতে পেরে তড়িঘড়ি জেল সুপারের কাছে ছুটে যান তমলুক মহাকুমার পুলিশ আধিকারিক অতীশ বিশ্বাস। আনিসুরের এই মুক্ত হওয়ার বিষয়টিতে প্রবল আপত্তি তুলে ছোট্ট দুই ছেলেকে নিয়ে জেলা আদালতে হাজির হন কোরবান শাহের স্ত্রীও। টানাপোড়েনের জেরে রিলিজ হওয়ার ঘণ্টা দুয়েকের মাথাতেই কোলাঘাট থেকে আনিসুরকে ফের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে জামিনে মুক্ত হলেন আনিসুর রহমান।