বাবুল হক, মালদহ: রামনবমীর (Ram Navami) মিছিল এগিয়ে আসতেই শুরু হল পুষ্পবৃষ্টি। দু'পাশ থেকে সংখ্যালঘু মুসলমানরা ফুল ছুঁড়তে থাকলেন। নিজে হাতে মিষ্টি খাইয়ে দিলেন মিছিলে আগত রামভক্তদের। একে অপরকে জড়িতে ধরে সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হল। রামনবমীর দিনে এই ছবি ধরা পড়ল মালদহ শহরে। "বিভাজন নয়, এক হয়েই থাকতে চাই।" এই বার্তাই দিলেন মনি রায়, মহম্মদ আসিফ হোসেনরা।
আগামি বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে হিন্দুত্ববাদের জোরালো সওয়াল তুলে প্রচার নেমেছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা। রামনবমীকে ইস্যু করে আজ রবিবার সকাল থেকে মিছিল চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। কোনও অশান্তির আবহ যাতে না তৈরি হয়, সেজন্য কড়া নজরদারি চলছে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও। রাস্তায় রাস্তায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। মালদহ জেলাতেও রামনবমীর মিছিল ঘিরে চলছে নজরদারি। কিন্তু এদিন সকালে মালদহ শহরে দেখা গেল সম্প্রীতির ছবি। রামের মিছিলে মিলে গেলেন রহিমরা। মালদহ শহরের মুসলিম কমিটি আটকোশী আঞ্জুমান আকবারিয়া ইসলামিয়ার সদস্যরা রামনবমীর মিছিলের আগতদের বুকে জড়িয়ে বরণ করে নিলেন।
মালদহ শহরে রাস্তায় মিছিল আসার কিছু সময় পরেই শুরু হয় ফুলের বৃষ্টি। রাস্তার দু'পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এলাকার সংখ্যালঘু মুসলমানরা। তাঁরাই ফুল ছড়াতে থাকলেন। মিছিলে সমবেত হওয়া রামভক্তদের মিষ্টিমুখ করানো হল। এদিন সকাল থেকে রোদের তেজও ছিল যথেষ্ট। ফলে মিছিলে পা মেলানো ব্যক্তিদের জন্য পানীয় জলের বোতলও রাখা ছিল। প্রত্যেকেকে সেই জলের বোতল বিতরণ করা হল। দুই সম্প্রদায়ের মানুষরা এদিন সকালে মিলে গেলেন। আনন্দে সামিল হলেন সকলে। এই প্রসঙ্গে মহম্মদ আসিফ হোসেন বলেন, "স্বাগত জানানোর জন্যই এই আয়োজন করা হয়। হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই। সম্প্রীতি, শান্তির বার্তা দেওয়া হয় এদিন।" নুরুল ইসলাম বলেন, "এটা পশ্চিমবঙ্গ, মালদহ। আমাদের ভারতবর্ষকে টুকরো হতে দেব না। হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই।" মিছিলে সামিল হওয়া এক ব্যক্তিকে মিষ্টি খাইয়ে কিরণ হোসেন বলেন, "ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। দেশের পরিস্থিতি যেন শান্ত থাকে। সেজন্যই শান্তির বার্তা দেওয়া।"
এই আপ্যায়ণ পেয়ে উচ্ছ্বসিত মিছিলে আগত রামভক্তরা। মিষ্টিমুখ করে মনি রায় বলেন, "খুবই ভালো লাগছে। এমনভাবেই একসঙ্গে থাকতে চাই। এত ভালো কোনওদিনও লাগেনি।