সুব্রত বিশ্বাস: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভেঙে ফেলা হয়েছিল সেতুটি। ৮৫ বছর পর এবার সেই সেতুতেই শুরু হল রেল চলাচল। আজিমগঞ্জ-নশিপুর সেতু তৈরির পর প্রথম মালগাড়ি চলল ট্রায়াল হিসাবে। খুশির হাওয়া মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে। এই রেলসেতুটি পুরো চালু হলে কলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ির দূরত্ব ২১ কিলোমিটার কমবে বলেই দাবি জঙ্গীপুর প্যাসেঞ্জার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের।
জানা গিয়েছে, লালুপ্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস করে ছিলেন। সেই সময় এই সেতু নির্মাণের জন্য রেলমন্ত্রক থেকে ৪৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০১০ সালে সেটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও জমি জটিলতায় তার নির্মাণের কাজ থমকে ছিল। এর পর প্রায় বছর দুই আগে অসমাপ্ত কাজ পরিদর্শন করেন বহরমপুরের সাংসদ তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী ও পূর্ব রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার-২ (কনস্ট্রাকশন) অরুণ কুমার। ওইদিনই আজিমগঞ্জের দিয়ার মাহিনগর এলাকা পরিদর্শন করেন তাঁরা। জমিদাতাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনাও হয় তাঁদের মধ্যে। জমিদাতাদের মধ্যে কয়েক জন চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেও রেলসেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে তাঁরা বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন সেসময়।
[আরও পড়ুন: বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ে হানা ইডি’র, ট্রাস্ট সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ]
তার পর রেলসেতুর কাজ শুরু হয়। জমিদাতাদের রাজ্য সরকারের তরফে কিছু সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার পরিকল্পনা কার্যকর হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের তরফেও রেল এবং তাঁদের নির্মাণকর্মীদের পুরো নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে কথাও দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে হাওড়া থেকে আজিমগঞ্জ হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ৫৬৭ কিমি। শিয়ালদহ থেকে ভায়া আজিমগঞ্জ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব ৫৭৪ কিমি এবং হাওড়া থেকে ভায়া বোলপুর, রামপুরহাট নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব ৫৭৩ কিলোমিটার।
নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু চালু হলে শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব কমে হবে ৫৫৩ কিমি। জঙ্গীপুর প্যাসেঞ্জার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি শিয়ালদহের ডিআরএমকে এক স্মারকলিপিতে দাবি করেন, কলকাতা-বহরমপুর-জঙ্গীপুর-মালদহ হয়ে উত্তরবঙ্গের জন্য সকালে একটি ট্রেন দেওয়ার জন্য। ২১ কিলোমিটার যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত হলে যাত্রীদের উপকার হবে বলে দাবিপত্র বলা হয়েছে।