shono
Advertisement
Panagarh Accident

ঋণ ৫৭ লক্ষ! পানাগড় দুর্ঘটনায় মৃত সুতন্দ্রাদের বাড়ির দখল নিল ব্যাঙ্ক, কোথায় যাবে অসহায় মা?

ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্ধকারে সুতন্দ্রার মা।
Published By: Subhankar PatraPosted: 06:45 PM Nov 28, 2025Updated: 08:31 PM Nov 28, 2025

সুমন করাতি, হুগলি: স্বামীকে কেড়েছে মারণ রোগ ক্যানসার। পানাগড়ে মেয়ে সুতন্দ্রার মৃত্যু হয় গাড়ি দুর্ঘটনায়। চন্দননগরের সেই চট্টোপাধ্যায় পরিবারে হারাচ্ছে শেষ সম্বল বাড়ি টুকুও। ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধ করতে না পারায়, বাড়িটি বাজেয়াপ্ত করছে কর্তৃপক্ষ। বৃদ্ধ শাশুড়ি ও মাকে নিয়ে পথে বসেছেন সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। বাপের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

Advertisement

২০২৩ সালে একটি রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ৫৭ লক্ষ টাকার ঋণ নেন সুতন্দ্রার বাবা। তারপরই তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে। জলের মতো টাকা খরচ করেও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি স্ত্রী তনুশ্রী ও মেয়ে সুতন্দ্রা। ঠিকাদারি কাজেও লোকসানের মুখে পড়েন তাঁরা। কোনওমতে সংসারের হাল ধরেন সুতন্দ্রা। কয়েকমাস যেতে না যেতেই, পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার। অভিযোগ ওঠে, ইভটিজারদের হাত থেকে বাঁচার সময় গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে।

পরপর স্বামী ও মেয়েকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি তনুশ্রীদেবী। শোক সঙ্গী করে শাশুড়ি কল্পনা চট্টোপাধ্যায় ও মা কল্যাণী রায়কে নিয়েই চন্দননগরের নাড়ুয়ার বাড়িতে থাকছিলেন। কিন্তু লোন পরিশোধ না করায় সেই বাড়ির দখল নিল ব্যাঙ্ক।

তনুশ্রীদেবী জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কের সঙ্গে বারবার কথা বলেছেন কিন্তু কোনও সুরহা হয়নি।  তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বাড়ির জন্য ৩০ লক্ষ। দোকানের জন্য ১৭ লক্ষ টাকা ঋণ নেন স্বামী। ঋণ নেওয়ার সময় শুধু দোকানের জন্য একটা বিমা করা হয়। তার জন্য ৯০ হাজারের বেশি টাকা এককালীন নেওয়া হয়। কিন্তু সেই বিমার টাকা পাওয়া যায়নি। এখন আমার মাথার উপর কেউ নেই। ব্যাঙ্ক কথা শোনেনি। আমি বলেছিলাম ৩০ লক্ষ টাকা দিতে পারব। ব্যাঙ্ক দোকানটি নিয়ে নিক। তা শোনেনি ওরা। মেয়ে বেঁচে থাকলে হয়তো এই অবস্থা হত না। ও নিজের মতো অনেক চেষ্টা করেছিল। আমি গৃহবধূ। আমার পক্ষে এতটাকা পরিশোধ করা সম্ভব নয়। বাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি।"

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ২৩ ফ্রেব্রুয়ারি রবিবার পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চন্দননগরের বাসিন্দা বছর সাতাশের সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। নৃত্যশিল্পীর পাশাপাশি তিনি ছিলেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার। জানা যায়, অভিশপ্ত রাতে পানাগড়ে জাতীয় সড়ক ধরে গাড়ি করে ফিরছিলেন সুতন্দ্রা। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন মত্ত যুবক তাঁর গাড়ি ধাওয়া করে কটূক্তি করে। তরুণীকে ইভটিজিং করা হয়। তাঁদের হাত থেকে বাঁচতে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন সুতন্দ্রার চালক৷ তার ফলে নিয়ন্ত্রণ হারায় গাড়ি। প্রাণ হারান সুতন্দ্রা। যদিও ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইভটিজিংয়ের তত্ত্ব খারিজ করে দেন পুলিশ। সেই সুতন্দ্রার পরিবার হারাতে চলেছে বাড়ি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • স্বামীকে কেড়েছে মারণ রোগ ক্যানসার। পানাগড়ে মেয়ে সুতন্দ্রার মৃত্যু হয় গাড়ি দুর্ঘটনায়।
  • চন্দননগরের সেই চট্টোপাধ্যায় পরিবারে হারাচ্ছে শেষ সম্বল বাড়ি টুকুও।
  • ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধ করতে না পারায়, বাড়িটি বাজেয়াপ্ত করছে কর্তৃপক্ষ।
Advertisement