shono
Advertisement

Breaking News

৩০ বছরের ভবঘুরে জীবনে ইতি, অসুস্থ বৃদ্ধাকে স্বজনের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

বাঁকুড়ার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েই বৃদ্ধাকে চিনতে পারেন এক আত্মীয়। The post ৩০ বছরের ভবঘুরে জীবনে ইতি, অসুস্থ বৃদ্ধাকে স্বজনের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:33 PM Nov 21, 2019Updated: 02:58 PM Nov 21, 2019

টিটুন মল্লিক,বাঁকুড়া: তিরিশ বছর পর স্বজনদের কাছে ফেরা। নেপথ্যে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ এবং হাসপাতাল। তাঁদের যৌথ উদ্যোগে ভবঘুরে বৃদ্ধা বুজি কালিন্দী ফিরে পেলেন নিজের পরিবার। ফিরলেন পুরুলিয়ায়, নিজের বাড়িতে।
সেই ১৯৮৯ সালের ঘটনা। রাঁচি থেকে ট্রেনে পুরুলিয়া ফেরার পথে স্টেশনে হারিয়ে গিয়েছিলেন বুজি কালিন্দী। তখন তাঁর বয়স তিরিশ পেরিয়েছে। পথ ভুলে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন তিনি। ঘুরে বেড়াতে থাকেন যত্রতত্র। এভাবেই কেটে গিয়েছে ৩০টা বছর। বাড়ি ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু কখন কীভাবে কার ভাগ্যচক্র ঘুরে যায়, কেউ বলতে পারেন না। তাই পথ দুর্ঘটনা বুজিদেবীর জীবনে বিপন্নতার পাশাপাশি নতুন আলো নিয়ে এল।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘বিলগ্নিকরণের পথে হেঁটে সমাধান সম্ভব নয়’, কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে সরব মমতা]

গত জুলাই মাসে বাঁকুড়া সদর থানা এলাকায় এক দুর্ঘটনায় আহত হন বৃদ্ধা বুজি কালিন্দী। তাঁর দু’হাত, দু’পা ভেঙে যায়। সদর থানার পুলিশ তাঁকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে ভরতি করে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তখন থেকেই ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছিল। ওই ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ড সূত্রে খবর, প্রথমে বেডেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। কিন্তু যে কোনও সময় বেড থেকে পড়ে বিপত্তি ঘটার ভয়ে ওয়ার্ডের মেঝেতে শুইয়ে রেখেই চিকিৎসা শুরু করা হয়। দীর্ঘ কয়েক মাসের চিকিৎসায় তিনি আপাতত সুস্থ।

বুজি কালিন্দী

সম্প্রতি ওই ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডেই পেটের যন্ত্রনা নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভরতি হয়েছিলেন সন্ধ্যা কালিন্দী। ৩০ বছর ধরে অদেখা মানুষটির মুখ দেখে সন্ধ্যাদেবীই চিনতে পারেন, তাঁর দিদির ছোট ননদ বুজি দেবীকে। তিনি খবর দেন তাঁর দিদি আদরী কালিন্দীকে। ছোট ননদের খোঁজ পেয়ে ছেলে বাবলুকে সঙ্গে নিয়ে পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়ার হাসপাতালে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ছুটে যান আদরী দেবী। এতদিন পর হারিয়ে যাওয়া কাছের মানুষের খোঁজ পেয়ে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চান তাঁরা। বছর ষাটের বুজিদেবীও নিজের বৌদিকে দেখে বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। বাঁকুড়া থানার পুলিশের অনুমতির অপেক্ষা করতে থাকেন।

[আরও পড়ুন: গরু চোর সন্দেহে রাজ্যে ফের গণপিটুনি, মৃত্যু ২ যুবকের]

বুধবার সকাল থেকে আদরীদেবী ও তাঁর ছেলে বাবলু স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত প্রধানের দেওয়া ‘জানাচিনি’ শংসাপত্র, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাজির হন পিসি বুজি কালিন্দীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। পুলিশ সমস্ত তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। হাসপাতালের তরফে বুজিদেবীকে তুলে দেওয়া হয় পুরুলিয়া থেকে আগত কালিন্দী পরিবারের হাতে। ওয়ার্ডের কর্তব্যরত অন্যান্য কর্মীরাও বুজিদেবীকে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি। অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, ‘দীর্ঘ চার,পাঁচ মাস চিকিৎসা চলেছে ওই রোগীর। পুলিশ তাঁকে অজ্ঞাত পরিচিত হিসেবেই ভরতি করেছিল হাসপাতালে। তাঁকে পরিবারে হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা খুশি।’ প্রিয়জনদের খুঁজে পেয়ে শেষজীবন অন্তত অনেকটা সুন্দর হয়ে উঠল বৃদ্ধার বুজি কালিন্দীর।

The post ৩০ বছরের ভবঘুরে জীবনে ইতি, অসুস্থ বৃদ্ধাকে স্বজনের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement