নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ‘পুলিশকে বোমা মারুন’ – বছর কয়েক আগে এই হুমকি বঙ্গ রাজনীতির অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল। সৌজন্যে – বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সে নিয়ে মামলা, মোকদ্দমা কিছু কম হয়নি। তবে সেই অনুব্রত-কথার যথার্থ অনুসরণ হয়ে চলেছে আজও। রবিবার অনুব্রতর পথে হেঁটেই জনসভা থেকে বীরভূমের বিজেপি নেতার হুমকি, ‘পুলিশকে লাঠি, হাঁসুয়া দিয়ে মারুন। কোনও মামলা হবে না।’
রবিবার মহম্মদবাজারের রামপুর পঞ্চায়েতের মাঠে বিজেপির প্রতিবাদ সভা ছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপি সমসংখ্যক আসন পেয়েছে। কিন্তু এখনও বোর্ড গঠন হয়নি। বিজেপির অভিযোগ, বোর্ড গঠনে দেরি করে প্রশাসনিক কাজকর্মে ঢিলেমি করছে তৃণমূল। তারই প্রতিবাদে এদিন সভা করে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। ছিলেন মহিলা মোর্চা সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেখান থেকেই জনগণের উদ্দেশে বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডলের নিদান, ‘পুলিশের কাছ থেকে কাজ পেতে হলে, লাঠি, হাঁসুয়া ব্যবহার করুন।‘ দুবরাজপুর থানার এসআই অমিত চক্রবর্তী খুনের ঘটনা উল্লেখ করে তাঁর আরও বক্তব্য, ‘বীরভূমে পুলিশকে মারলে কিছু হয় না।অভিযুক্তরা সহজেই ছাড় পেয়ে যান, যেমনটা হয়েছে অমিত চক্রবর্তী হত্যাকণ্ডে জড়িতদের ক্ষেত্রে।‘ একই সুরে বিজেপি মহিলা মোর্চা সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘প্রশাসনিক সুবিধা পেতে হলে মেয়েদেরও হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে। সব নিয়ম ভাঙতে হবে। তাতে মামলা হলে, হোক।‘ বিজেপির দুই নেতানেত্রীর এমন বক্তব্যে স্বভাবlই সরগরম জেলার রাজনীতি।
[‘মমতা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন’, সুর বদলে পালটি খেলেন দিলীপ]
জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানিয়েছেন, ‘রবিবার মহম্মদবাজারে বিজেপির সভার অনুমতি ছিল না। জোর করে সভা করা হয়েছে। তার জন্য মামলা দায়ের করছে পুলিশ। এছাড়া উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য আলাদা ধারায় মামলা হবে।‘ বিজেপির রথযাত্রা নিয়ে জটিলতার পর সম্প্রতি জেলায় জেলায় সভা করছে রাজ্য নেতৃত্ব। বেশিরভাগ সভাতেই দিলীপ ঘোষের উপস্থিতি এবং বক্তব্য উনিশের আগে প্রস্তুতি লড়াইয়ে বেগ দিচ্ছে। এবার তা আরও উসকে দিলেন বীরভূমে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, এই জেলায় অনুব্রতর লৌহদুর্গে ফাটল ধরাতে রাজ্য বিজেপির অন্যতম হাতিয়ার হতে চলেছেন কালোসোনা মণ্ডল।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
The post ‘পুলিশকে মারুন‘, অনুব্রতর সুরে হুঁশিয়ারি বিজেপি নেতার appeared first on Sangbad Pratidin.
