স্টাফ রিপোর্টার, বারাকপুর: কয়েক মাস আগে টিটাগড়ে (Titagarh) বোমা ফেটে মৃত্যু হয় এক কিশোরের। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে টিটাগড় ফ্রি ইন্ডিয়া হাই স্কুলের ছাদে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে কাঁকিনাড়া (Kankinara) রেলস্টেশন সংলগ্ন ভাটপাড়া প্রেমচাঁদ নগরে বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় বছর সাতের এক শিশুর। এরপর ফের বুধবার সন্ধ্যায় টিটাগড় থানার ওরন পারার কারবালা এলাকায় খেলার সময় বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হয় বছর এগারোর মহম্মদ আফরোজ। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে পরপর এইভাবে বোমা বিস্ফোরণে (Bomb blast) শিশুমৃত্যু এবং আতঙ্কের ঘটনা ঘটায় স্কুলে পড়ুয়াদের সচেতনতার পাঠ পড়ালেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বৃহস্পতিবার আহত শিশুর স্কুল টিটাগড় আরপি গুপ্ত পথের গান্ধী বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের অচেনা কোনও বস্তু স্পর্শ না করার পরামর্শ দেন শিক্ষিকারা। এবিষয়ে স্কুলের টিচার ইন চার্জ নন্দিতা শর্মা বলেন, “অন্যান্য পড়ুয়াদের থেকে জানতে পারি আগের দিন বোমা বিস্ফোরণে আমাদের স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মহম্মদ আফরোজ জখম হয়েছে। তাই এদিন স্কুলের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের জানালাম টিফিনের সময়ে ক্লাস রুমেই থাকতে। স্কুলের বাইরে কোন অচেনা বস্তুকে না ধরতে। সেখান থেকে সরে যেতে। অভিভাবকদেরও এবিষয়ে বলব।”
[আরও পড়ুন: ‘বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে খোঁচা ভালভাবে নিচ্ছি না’, কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের]
প্রসঙ্গত, টিটাগড়ের কারবালা এলাকায় মহম্মদ আফরোজ সহ তিন কিশোর কিছু কাগজ জ্বালিয়ে আগুন পোয়াচ্ছিল। সেই সময় বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে দেখে গুরুতর জখম হয়েছে আফরোজ। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বারাকপুর বিএন বস হাসপাতাল, পরে তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। আফরোজের সঙ্গে বোমার আঘাতে অল্পবিস্তর জখম হয় মহম্মদ ওয়াসিব।
এদিন ওয়াসিব বলে, “আগুন পোয়ানোর সময় মাঠের পাশে একটি ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগে গোলাপি রঙের পাউডার ছিল। সেটি আগুনে দিতেই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। এরপর ব্যাগটি পাশে ফেলে দিই। তখনই বোমা ফেটে আমি আর আফরোজ জখম হই।” ঘটনাস্থল থেকে একটি তাজা বোমা পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। বৃহস্পতিবার বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা ঘটনাস্থল সহ সংলগ্ন এলাকায় বোমার খোঁজে তল্লাশি চালান। তবে, এদিন কোনও বোমার উদ্ধার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, কে বা কারা বোমা রেখেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিন জখম কিশোরের বাড়িতে যান বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। এরপর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আগে বোমা ফেলা হত। সেটা বন্ধ হয়েছে। এখন বোমা রেখে চলে যাচ্ছে। এর পিছনে চক্রান্ত রয়েছে। সরকারকে বদনাম করার জন্যই বিরোধীরা এটা করতে পারে। অথবা কেউ ব্যক্তিগত কারণেও এটা করে থাকতে পারে।”