বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীদের হামলা নদিয়ার চাকদহ পুরসভার চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তীর বাড়িতে। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে দুষ্কৃতীরা চেয়ারম্যানের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি ছোঁড়ে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ চেয়ারম্যান। যদিও চেয়ারম্যান বা কারও কোন ক্ষতি হয়নি। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাকদহে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে তৃণমূলের সমর্থকরা চাকদহ রেল স্টেশনে কিছুক্ষণ অবরোধ করেন। চেয়ারম্যান যদিও বলেছেন, ‘আমি রেল অবরোধ বা কোনও অবরোধের পক্ষে নই। সাধারণ মানুষের অসুবিধা হোক, তা আমি চাই না।’ কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এই হামলা সমাজবিরোধীদের কাজ বলে অভিযোগ করলেও দীপক চক্রবর্তীর আরও অভিযোগ, ‘মানুষের জন্য আমার কাজে কারও স্বার্থে আঘাত লাগছে হয়ত, তারাই সমাজবিরোধীদের দিয়ে আমাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল।’ পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে তাঁর অভিযোগ, ‘চাকদহে সমাজবিরোধীমূলক বেশ কিছু ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটছে। পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না। অপরাধীদের ধরার চেষ্টাও করছে না। এমনকি, খুনের চেষ্টা চালানোর মতো ঘটনা ঘটলেও পুলিশ রাতে আমার বাড়িতে কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেনি।’
[মাঝেরহাটের বিভীষিকা না কাটতেই শিলিগুড়িতে ভেঙে পড়ল ব্রিজ]
পুলিশ অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ঠিক নয় বলে জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কারা এই হামলা চালাল, কেন চালাল, কার নির্দেশে এই হামলা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে। সত্যিই চেয়ারম্যানকে খুনের উদ্দেশ্যে এই হামলা কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অবশ্য এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের চাকদহ ব্লক সভাপতি সাধন বিশ্বাস বলেছেন, “মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা মানুষের পাশে থেকে, মানুষের জন্য কাজ করে। এর বাইরে কোনও অপকর্ম করা আদৌ কাজ নয়। আমরা সৎপথেই কাজ করি। তবে কিছু মানুষ শান্ত চাকদহকে অশান্ত করা ও অশান্ত দেখানোর চেষ্টা করছেন। সমাজবিরোধীদেরও মদত দিয়ে থাকেন। তবে তৃণমূল কংগ্রেস শান্তির পক্ষে। যারা অশান্ত করার চেষ্টা করছেন, তারা ঠিক কাজ করছেন না।’ এই ঘটনার পর দীপকবাবু চাকদহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন।
[জেলাশাসককে হুমকি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ বিজেপি নেতার]
চাকদার তৃণমূল নেতা ও পুরসভার চেয়ারম্যান দীপকবাবু অভিযোগ করে জানান, ‘বৃহস্পতিবার রাত বারোটা নাগাদ তিনি তার বাড়ির পোষা কুকুরটিকে নিয়ে বাড়ির সামনে থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে এসে যখন বাড়িতে ঢুকতে যাবেন সেই সময় মেন গেটের সামনে একটি স্কুটিতে চেপে তিন যুবক আসে। মাঝে বসে থাকা যুবকটি তার বাড়িটি দেখিয়ে বলে, ‘এই যে এই বাড়ি’। তিনি সাহস করে ফের গেটের বাইরে বের হলে স্কুটি চালিয়ে ওই যুবকেরা আপাতত চলে যায়। তিনি গেট বন্ধ করে বাড়িতে ঢোকার সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে প্রথমে তিনটি বোমা ছোঁড়ে। গেটের সামনে সারিবদ্ধ সুপারি গাছে বোমাগুলি বাধা পেয়ে ফাটে। ফলে তিনি বেঁচে যান। এরপর তাকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোঁড়ে। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাড়ির কাচে লাগে। এরপরই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর পুলিশ এলেও ওই অপরাধীদের ধরার কোন চেষ্টা করেনি বলে অভিযোগ। তিনি পুলিশি নিস্ক্রিয়তাকেই দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘চাকদহ থানার পুলিশ আদৌ সক্রিয় নয় বলে একের পর এক ঘটনা ঘটছে। সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।’ তিনি ভাল কাজ করছেন বলে ব্যক্তি স্বার্থে কারওর আঘাত লাগছে বলেও দীপকবাবুর অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
The post মধ্যরাতে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব, চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে গুলি-বোমা চাকদহে appeared first on Sangbad Pratidin.
