সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: অবৈধ গাড়ির রমরমায় প্রবল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বৈধ বাস মালিকদের। এরই প্রতিবাদে সোমবার সুন্দরবন পুলিশ জেলায় ১৩টি রুটে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাস মালিক সংগঠন। সুন্দরবন পুলিশ জেলাজুড়ে একদিনের বাস ধর্মঘটে ব্যাপক প্রভাব পড়ল এলাকায়।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন পথে বেরিয়ে হয়রানির শিকার হতে হল সুন্দরবন পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতকারী বাস যাত্রীদের। এদিন সকাল থেকেই ১৩টি রুটে বাস বন্ধ ছিল। রুট পারমিটহীন অবৈধ বিভিন্ন গাড়ি অবাধে রাস্তায় চলাচল করায় লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না বাস মালিকরা। সুন্দরবন জেলা বাস অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট কমিটির সভাপতি রইচ মোল্লা বলেন, "বিভিন্ন রুটে অবাধে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ গাড়ি চলাচল করছে। এ সমস্যা আজকের নয়, দীর্ঘদিনের। প্রতিদিনই বাড়ছে অবৈধ গাড়ির সংখ্যা। বিভিন্ন রুটে অবৈধভাবে চলাচল করছে প্রচুর সংখ্যায় অটো, টোটো, ট্রেকার, জিও গাড়ি ও ম্যাজিক গাড়ি। ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বৈধ বাসের মালিকদের।" তিনি আরও বলেন, "যাত্রীসংখ্যা কম হওয়ায় রোড ট্যাক্স, বিমা এবং ফাইনান্সের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না তাঁরা। সংসার খরচ চালাতেও অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে। সুন্দরবন জেলা পুলিশ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা না মেলায় এদিন সুন্দরবন পুলিশ জেলাজুড়ে বাস ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।"
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ধর্মঘটী বাস মালিকদের সঙ্গে এদিন বৈঠক করে। সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। তারপরই সংগঠনের তরফে জানানো হয়, ধর্মঘট তুলে নেওয়া হবে। আগামিকাল মঙ্গলবার থেকে ওই ১৩টি রুটেই পুনরায় বাস চলাচল করবে। সংগঠনের সভাপতি বলেন, "প্রশাসনকে সংগঠনের পক্ষ থেকে একমাস সময় দেওয়া হয়েছে। সমস্যার সমাধান না হলে লাগাতার বাস ধর্মঘটের পথে হাঁটবে জয়েন্ট কমিটি।"
এদিকে এই বাস ধর্মঘটে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সুন্দরবন পুলিশ জেলাজুড়ে। সুন্দরবন পুলিশ জেলা থেকে যাতায়াতকারী এম-১০, ফলতা সেক্টর, ২৪৬, এসডি-১৯, নামখানা, কাকদ্বীপ, বকখালি, এসডি-৫০-সহ ১৩টি রুটে চলাচলকারী সমস্ত বাস এদিন বন্ধ ছিল। কোনও বাসই রাস্তায় না নামায় দিনভর নাকাল হতে হয়েছে যাত্রীদের। স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারিতে যাতায়াত করা অসংখ্য যাত্রীকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। অনেক বেশি ভাড়া গুণে ব্রেক-জার্নি করে তবেই গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। অনেকেই আবার নির্দিষ্ট সময়ে অফিস ও আদালতে পৌঁছতে না পারায় মাশুল গুনেছেন।