নন্দন দত্ত, সিউড়ি: শুল্ক বিভাগের স্টিকার লাগানো গাড়ি, সেই বিভাগের অফিসার সেজে যাত্রীদের গাড়িতে তুলে লুটপাট। কিন্তু এত কৌশলের পরও শেষরক্ষা হল না। সিভিক ভলান্টিয়ারদের তৎপরতায় যোগীরাজ্যের সেই গাড়ি-সহ চালক গ্রেপ্তার হল। তবে বাকি দুজন পলাতক। গাড়িটি উত্তরপ্রদেশের বলে জানা গিয়েছে। বীরভূমের নলহাটির লোহাপুর ফাঁড়ির পুলিশ তদন্তে নেমেছে। খোঁজ চলছে পলাতকদের। তাদের নাগালে পেলে পুলিশ লুটের সামগ্রী ফিরিয়ে দিতে পারবে বলে আশাবাদী।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে নলহাটি থানা এলাকার লোহাপুর বাজারের কাছে। এদিন রামপুরহাটের বড়জোল গ্রামের অনুপ মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী-পুত্র সন্তানকে নিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসের জন্য জীবন্তি এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন। আচমকা তাঁদের পাশে সাদা পোশাকের এক যুবক নিজেকে সেনা জওয়ান পরিচয় দিয়ে দাঁড়ায়। প্রস্তাব দেন, নিজেদের গাড়িতেই অনুপবাবুর পরিবারকে রামপুরহাট পৌঁছে দেবেন। তা শুনে তাঁরা গাড়িতে উঠে যান। এর পরই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখে পড়েন অনুপবাবু ও তাঁর পরিবার। সমস্ত লুট করা হয় বলে অভিযোগ করেন।
যোগীরাজ্যের এই গাড়িতে তুলে প্রতারণার অভিযোগ। নিজস্ব ছবি।
অনুপবাবুর পরিবারের আরও অভিযোগ, লুটপাটের পর শুল্ক বিভাগের স্টিকার লাগানো গাড়িটি তিনজনকে নলহাটির গোপালপুর পেট্রোল পাম্পের কাছে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় শুল্ক বিভাগের গাড়িটি। যাত্রীরা দ্রুত গাড়ির নম্বর দেখে কয়থা মোড়ে থাকা সিভিক ভলেন্টিয়ারদের জানায়। তাঁরা ওই গাড়িটিতে ধরতে উদ্যোগী হয়। মুর্শিদাবাদের দিকে পালানোর সময় গার্ডরেল দিয়ে পথ আটকে গাড়িটি ধরার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু জাতীয় সড়কে বাধা পেয়ে ওই প্রতারকরা রাজ্য সড়কে লোহাপুর বাজার দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। গাড়ি লক্ষ্য করে লোহাপুর মোড়ে থাকা কর্তব্যরত তিন সিভিক ভলান্টিয়ার - শিস মহম্মদ হুমায়ুন কবীর এবং মুরসালিম শেখ গাড়িটিকে ধাওয়া করে। লোহাপুর বাজারে গাড়িটি রেলগেটে আটকে যায়। সেই সুযোগে গাড়িতে থাকা দুজন প্রতারক দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে ওই তিন সিভিক ভলান্টিয়ার গাড়ির চালক-সহ গাড়িটিকে আটক করেন। লোহাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে গাড়িটিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রতারিত যাত্রী অনুপ মণ্ডল জানান, গাড়িতে যাওয়ার সময় তাঁদের কাছে থাকা নগদ টাকা ও সোনার আংটি খুলে নেয় সেনা জওয়ানের পরিচয় দেওয়া ওই দুজন। তাঁর কথায়, ''আমরা প্রতারিত হয়েছি বলে বুঝতে পেরেছিলাম। ছেলেকে বাঁচাতে আমরা চিৎকার করিনি। তবে সিভিকদের তৎপরতায় উত্তরপ্রদেশের চালক-সহ গাড়িটির বিষয়ে তদন্ত করছে। গাড়িতে থাকা বাকি দুজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।''