অর্ণব আইচ: আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে! এমন অভিযোগ তুলে কলকাতা পুলিশের আরও এক আধিকারিকের উপর দায় চাপাতে চাইছে সিবিআই। সিবিআইয়ের দাবি, ওই পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের। আর ওই পুলিশ আধিকারিকের মাধ্যমেই নাকি সঞ্জয়কে হাসপাতালে ডেকে পাঠায় সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা, এমনই অভিযোগ সিবিআইয়ের। যদিও সূত্রের খবর এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে বিশেষ কোনও তথ্য-প্রমাণ পেশ করতে পারেনি সিবিআই।
সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের অন্তত ৬০টি মোবাইল কলের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে সঞ্জয় রায়ের সরাসরি যোগাযোগ ছিল, এমন কোনও প্রমাণ নেই আধিকারিকদের কাছে। সেক্ষেত্রে সঞ্জয় রায়, সন্দীপ ঘোষ এবং তাদের ঘনিষ্ঠদের কমন ফ্যাক্টরের খোঁজ করছে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে ওই পুলিশ অফিসারের একাধিকবার কথা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের যে পুলিশ কর্মী ও আধিকারিকদের সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করে জেরা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন ওই পুলিশ আধিকারিকও। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ওই পুলিশ আধিকারিক সিবিআইকে জানিয়েছেন যে, রোগী ভর্তিকে কেন্দ্র করে সন্দীপবাবুর সঙ্গে তার কথা হয়। এ ছাড়াও আরও কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি কথা বলেন আর জি করে ভর্তি হওয়া কয়েকজন রোগীর চিকিৎসার ব্যাপার নিয়েই।
এখানেই শেষ নয়। ওই পুলিশ আধিকারিক সিবিআইয়ের কাছে স্বীকার করেছেন, রোগীদের ভর্তি ও দেখভালের কারণেই সঞ্জয় রায়কে তিনি আর জি কর হাসপাতালে যেতে বলতেন। যদিও সঞ্জয় মূলত এন আর এস হাসপাতালে পুলিশের পরিবারের রোগী ভর্তি ও দেখভালের বিষয়টি দেখত। ওই পুলিশ আধিকারিক সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন, রোগী দেখভালের জন্যই তিনি সঞ্জয় রায়কে গত ৮ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে যেতে বলেছিলেন। যদিও সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানার চেষ্টা চলছে, সন্দীপ বা তাঁর ঘনিষ্ঠদের কথায় ওই পুলিশ আধিকারিক ভোর রাতে সঞ্জয় রায়কে আর জি কর হাসপাতালের চারতলায় সেমিনার রুমে যেতে বলেছিলেন কি না। তাদের প্ররোচনায় সঞ্জয় রায় তরুণী চিকিৎসকের উপর ওই নারকীয় অত্যাচারের পর খুন করেছে কি না, অথবা আগে থেকে অত্যাচারের ফলে অচেতন ওই তরুণীর উপর সে যৌন নির্যাতন চালায় কি না, সেই তথ্য জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। যদিও এই ব্যাপারে সিবিআইয়ের হাতে এখনও কোনও তথ্য বা প্রমাণ এসে পৌঁছয়নি। সিবিআইয়ের ধারণা, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর সঞ্জয় রায় ওই পুলিশ আধিকারিককে জানিয়েছিল, সে এই নারকীয় ঘটনাটি ঘটিয়েছে। কিন্তু একজন পুলিশ আধিকারিক হয়েও তিনি বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন। এমনকী, সঞ্জয়কে আশ্রয় দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ সিবিআইয়ের। যদিও এই ব্যাপারে তথ্য ও প্রমাণ জোগাড় করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।