ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ছবির ডান দিকে স্বামী বিবেকানন্দ, বাঁদিকে মহর্ষি চরক (Maharshi Charak)। নীচে পরপর আটটি লাইন। যা নাকি শপথবাক্য। চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্যে পঠনপাঠন শুরুর আগে মহর্ষি চরকের নামে শপথ নেবেন হবু চিকিৎসকরা তা ধাপে ধাপে লেখা হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের (National Medical Council) ওয়েবসাইটে এই আটটি লাইন ‘চরক শপথ’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এনএমসি-র নতুন প্রস্তাবে চরক শপথের শুরুতেই গুরুবন্দনা। তারপর পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে একজন আদর্শ চিকিৎসকের কী গুণ থাকা উচিত তার বিবরণ। শপথ নেওয়ার আগে হবু চিকিৎসক, পূর্ব দিকে মুখ করে অগ্নিসাক্ষী রেখে বলবেন, ‘‘শিক্ষাক্রম চলাকালীন আমি আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সংযমী হয়ে চলব। গুরুর পুত্র বা কন্যার মতো তাঁর প্রতি পূর্ণ অনুগত থাকব। সমস্ত নির্দেশ মেনে চলব। আমার ব্যবহারে সবসময় ধৈর্য প্রকাশ পাবে। গুরুর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করাই আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হবে।’’
[আরও পড়ুন: দলিত যুবকের সঙ্গে মুসলিম তরুণীর প্রেম, উত্তরপ্রদেশে যুগলকে খুন]
বৈদিক ভারতের চিকিৎসক মহর্ষি চরকের নামে শপথ নেওয়ার সময় ‘অহো দ্বিজ’ শব্দবন্ধ উচ্চারণ করতে হবে একজন মেডিক্যাল পড়ুয়াকে। যদিও ভারতের মতো বহুজাতিক ও বহু ধর্মের দেশে ‘দ্বিজ’ শব্দ বিতর্ক এড়াতে আলাদা করে ব্যাখ্যাও দিয়েছে এনএমসি। বলা হয়েছে, মানব সন্তান একবার মাতৃগর্ভে জন্মগ্রহণ করে, সেটি প্রথম জন্ম। গুরুর কাছে জ্ঞানার্জনের পর তাঁর দ্বিতীয় জন্ম হয়।
[আরও পড়ুন: ‘মোদি মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন’, কংগ্রেসকে পালটা আজাদের]
এই প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীণ চিকিৎসক ডা. রঘুনাথ মিশ্র বলেছেন, ‘‘চিকিৎসক রোগীর সেবা করবে। তাঁর গোপন সমস্যা হলে জানবে। এরমধ্যে নতুনত্ব কিছুই নেই। ‘হিপোক্রিটিক ওথ’ (Hippocratic Oath) বলে এতদিন আমরা যা জেনে এসেছি তারও মূল কথা এক। বরং হিপোক্রিটিক ওথ লিপিবদ্ধ। কিন্তু মহর্ষি চরক এমন কিছু লিপিবদ্ধ করেছিলেন বলে আমার অন্তত জানা নেই। একধাপ এগিয়ে তিনি বলেছেন, তবে শপথ যাই হোক আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নত হয়েছে ইউরোপে- এই তথ্য যুগে যুগে প্রমাণিত।