shono
Advertisement
Tamluk

আদালত অবমাননার অভিযোগ, বদলি হওয়া IO-কেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ

নজিরবিহীন এমন নির্দেশিকায় উত্তাল হয়ে ওঠে তমলুক আদালত চত্বর।
Published By: Subhankar PatraPosted: 09:27 PM Jan 31, 2025Updated: 10:37 PM Jan 31, 2025

সৈকত মাইতি, তমলুক: আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী অফিসারকেই বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিলেন বিচারক। শুক্রবার তমলুকের জেলা ও দায়রা আদালতের (২য়) বিচারক এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন, সরকারি আইনজীবী সৌমেন দত্ত। শুক্রবার নজিরবিহীন এমন নির্দেশিকায় উত্তাল হয়ে ওঠে তমলুক আদালত চত্বর।

Advertisement

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের ২১ জুন পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে কোলাঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। দুই মহিলা-সহ পরিবারের অন্যদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে। খুনের চেষ্টার অভিযোগ জানিয়েছিলেন সালুকা গ্রামের গৃহবধূ তনুজা খাতুন। ঘটনার তদন্তে নামে কোলাঘাট থানার পুলিশ। মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন কোলাঘাট থানার তৎকালীন এসআই সুব্রত দাসগুপ্ত। যিনি বর্তমানে ট্রান্সফার হয়ে হাওড়া জেলার দাসনগর থানায় কর্মরত রয়েছেন।

২০১৯ সাল থেকে এই মামলার শুনানি শুরু হয় তমলুক আদালতে। ফলে কোলাঘাট থানার তৎকালীন এসআই সুব্রতবাবুকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বারবার সমন পাঠায় আদালত। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলার মোকাবিলার কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাত দেখিয়ে ওই অফিসার আদালতে হাজির হননি। তাতেই ভারপ্রাপ্ত বিচারক মামলার পর্যবেক্ষণে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের কার্যকলাপ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে লিপিবদ্ধ করেন।

পরবর্তী সময়ে মামলার নিষ্পত্তিতে ওই পুলিশ অফিসারকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে রীতিমতো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। কিন্তু তারপরও ওই অফিসার আদালতের ডাকে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।

এরপরই চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে গত ৬ জনুয়ারি ওই অফিসারের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এতেই টনক নড়ে অফিসারের। শুক্রবার আদালতে ইউনিফর্মেই হাওড়া জেলার দাসনগর থানা থেকে তমলুকের আদালতে হাজিরা দিতে ছুটে আসেন সুব্রতবাবু। শুনানি চলাকালীন ওই অফিসারকে কেন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হবে না সেই কারণ দেখাতে বলা হয়। এমন অবস্থায় দিনভর নাটক চলার পর ক্ষমা প্রার্থনা করে বিচারকের কাছে আবেদন জানান অফিসার। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হওয়ায় বিকেল প্রায় ৩টা ৪০ নাগাদ বিচারক ওই পুলিশ অফিসারকে একদিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক ওভেদ শেরিং লেপচা।

আদালত হেফাজতে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই তমলুক কোটে ছুটে আসেন ঊর্ধ্বতন বেশ কিছু পুলিশ অফিসার থেকে শুরু করে প্রশাসনের আধিকারিকরাও। দ্রুত ওই অফিসারকে মুক্তির দাবিতে সরব হয়ে ওঠেন আইনজীবীদের একাংশ। যদিও এই ঘটনায় অপর অংশের আইনজীবীদের পালটা মন্তব্য শুনে আগের রায়ই বহাল রাখেন বিচারক। তা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় অবস্থা তৈরি হয় আদালতজুড়ে।

এ বিষয়ে এই মামলার সরকারি আইনজীবী সৌমেন দত্ত বলেন, "পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে কোলাঘাট থানায় একটি মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে এই মামলা চলার পরেও তদন্তকারী পুলিশ অফিসার আদালতে সাক্ষ্য দিতে গড়িমসি করেছিলেন। ফলে আদালত অবমাননার অভিযোগে ওই তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে একাধিকবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এদিন সমস্ত দিক বিবেচনা করে এমন নির্দেশ দিয়েছে বিচারক।" শনিবার ফের মামলাটি শুনানির জন্য উঠবে বলে আদালত সূত্রে খবর। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলার তদন্তকারী অফিসারকেই বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিলেন বিচারক।
  • শুক্রবার তমলুকের জেলা ও দায়রা আদালতের (২য়) বিচারক এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন, সরকারি আইনজীবী সৌমেন দত্ত।
  • নজিরবিহীন এমন নির্দেশিকায় উত্তাল হয়ে ওঠে তমলুক আদালত চত্বর।
Advertisement