সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনিকে কেন্দ্র করে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে উত্তাল পুরুলিয়ার আনাড়া ফাঁড়ি এলাকা। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ১০জনকে আটক করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: তর্পণ করবেন জেপি নাড্ডা, পুরুলিয়ায় মৃত কর্মীদের অস্তিকলস কলকাতায় আনছে বিজেপি]
শুক্রবার সকাল এগারোটা নাগাদ আনাড়া রেলওয়ে হাই স্কুলের পাশ দিয়ে একটি গাড়িতে চড়ে বেশ কয়েকজন যুবক যাচ্ছিলেন। তাতে ছিলেন এক মহিলা এবং একটি শিশুও। অভিযোগ, পুরুলিয়ার পারা থানার আনাড়া ফাঁড়ি এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় ওই মহিলার সঙ্গে অভব্য আচরণ করে এক যুবক। গাড়ির ভিতরে থাকা শিশুটিও কান্নাকাটি করে। তাতেই গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। অনেকেই ভাবেন ওই গাড়িতে শিশুকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগে ওই যুবক এবং মহিলাকে ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা। কথা কাটাকাটি হতে না হতেই শুরু হয় বেধড়ক মারধর। পরিস্থিতি কিছুক্ষণের মধ্যে অগ্নিগর্ভ রূপ নেয়। যুবকদের গাড়িটিকে আটকে আগুন জ্বালিয়ে দেয় স্থানীয়রা। সেই সময় গাড়ির ভিতরেই ছিলেন চালক।
খবর পেয়েই আনাড়া ফাঁড়ির বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ ওই যুবকদের উদ্ধার করতে গেলে তাতে বাধা দেন গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে প্রায় জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী এই ঘটনায় গুরুতর জখম হন। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। উত্তেজিত জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে পুলিশ ওই যুবকদের উদ্ধার করে।
[আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর জখম হাতি, ভাঙল রেলইঞ্জিন]
সপ্তাহদুয়েক ধরে শিশুচোর গুজবে গণপিটুনির ঘটনা বেড়েই চলেছে পুরুলিয়ায়। ইতিমধ্যে বলরামপুর, ঝালদা, পুরুলিয়া শহরে গণধোলাইতে জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাতেই নবতম সংযোজন আনাড়া ফাঁড়ির এদিনের ঘটনা। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তাতেই শামিল হয়েছেন এলাকার বহু যুবক। তবে তাতে কাজ হচ্ছে কই? এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, “গুজব ঠেকাতে প্রচার চলছে। আনাড়ায় আদৌ কী হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ছবি: সুনীতা সিং
The post ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনি, পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে পুরুলিয়ায় ধুন্ধুমার appeared first on Sangbad Pratidin.
