অর্ণব দাস, বারাকপুর: বিজেপির হাত থেকে লোকসভা ভোটে বারাকপুর ছিনিয়ে নেওয়া, নৈহাটি উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় তৃণমূলের। জোড়া জয় নিয়ে এই মুহূর্তে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ঘাসফুল শিবির রীতিমতো উজ্জীবীত। আর এই আবহে মঙ্গলবার বড়মার মন্দিরে পুজো দিতে নৈহাটি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। শোনালেন ৫ বছর আগেকার স্মৃতিকথা। কীভাবে তিনি নিজে পার্টি অফিসে বসে নৈহাটিবাসীকে অভয়বাণী দিয়েছিলেন, সেকথাও বললেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, ভাটপাড়া সংলগ্ন নৈহাটিতে পুজো দিয়ে আসলে অর্জুন সিংকেই নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বড়মার মন্দিরের পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
আগেই বলেছিলেন, মঙ্গলবার বড়মার মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর আগমন বার্তা পেয়েই তড়িঘড়ি প্রস্তুত হয় মন্দির কর্তৃপক্ষ। এদিন ডালায় শাড়ি, ফুল, মালা, মিষ্টি সব নিয়ে দুপুরে মন্দিরে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরোহিতরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে প্রতিমার সামনে নিয়ে যান। পুজো দেন। প্রণাম করে প্রসাদ গ্রহণ করে বেরিয়ে এসে জানান, এতদিন পর এখানে পুজো দিয়ে ভালো লাগছে। আগেই আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আসা হয়ে ওঠেনি। এবার নৈহাটি উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পর অবশেষে এলেন।
বড়মার মন্দিরে মালাদান মুখ্যমন্ত্রীর।
এর পরই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এল অতীতে নৈহাটি এলাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা। শোনালেন, কীভাবে বাম আমলের অস্থির সময় তিনি নিজে পার্টি অফিস খুলে বসে এলাকাবাসীকে অভয় দিয়েছিলেন। বললেন, ''আমাদের দলীয় কার্যালয় খুলতে হবে বলে আমি খুলিনি। আমি চেয়েছিলাম, আমাদের দেখে যাতে এলাকাবাসী আশ্বস্ত হন। তার আগে তো রাস্তায় কেউ বেরতে পারছিলেন না। আমি সবসময় চাই, এই বারাকপুর, নৈহাটি, ভাটপাড়া এলাকায় শান্তি বজায় থাকুক।'' এর পর এলাকার উন্নয়নে একগুচ্ছ ঘোষণা করেন তিনি। উপনির্বাচনে জয়ের জন্য জনতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''নৈহাটি ও ভাটপাড়া হাসপাতালে ওপিডি করা হবে। তাহলে আর এক্স রে বা অন্যান্য পরীক্ষা করতে অন্যত্র ছুটোছুটি করতে হবে না। বড়মার মন্দিরের কাছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি হবে। এখানে যে ফেরিঘাট আছে, তার সংস্কারের কাজ হবে। ঘাটের নাম হবে বড়মার নামে। সাংসদ তহবিল থেকে ১০ লক্ষ টাকা
বরাদ্দ করা হল।''