সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সীমান্ত এলাকা কোচবিহারে রাজ্য পুলিশকে আরও 'প্রো অ্যাকটিভ' হওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। আজ, সোমবার দু'দিনের সফরে কোচবিহারে পৌঁছেই প্রশাসনিক সভায় যোগ দেন তিনি। সেই সভা থেকেই একদিকে নাম না করে বিএসএফ এবং কেন্দ্রকে নিশানা করেন, অন্যদিকে রাজ্য পুলিশকেও আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন প্রশাসনিক প্রধান। তিনি বলেন, ''কোচবিহার জেলা বর্ডার জেলা। আইনশৃঙ্খলা ভালোভাবে দেখে রাখতে হবে। বর্ডার এলাকায় অযথা কোনও হস্তক্ষেপ মানা যাবে না।'' এলাকায় আইনশৃঙ্খলা এবং শান্তি বজায় রাখতে হবে বলেও নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।
এই বিষয়ে রাজ্য পুলিশকে সাবধান করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আরও বলেন, ''রাজ্যের যাঁরা অফিসার আছেন তাঁদের বলব, ভীতু হলে চলবে না। মারপিট করতে বলছি না, খুন খারাপি করতে বলছি না! তবে প্রো অ্যাকটিভ হোন।" আরও নাকাচেকিং বাড়াতেও নির্দেশ প্রশাসনিক প্রধানের। তাঁর কথায়, ''বর্ডার দিয়ে প্রচুর লেনদেন ইধার-উধার হচ্ছে। নাকাচেকিংটা ঠিকমতো করুন।'' এই প্রসঙ্গে নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "যারা বেশি সমালোচনা করে, তারাই এটা খেয়ে যায়! আর দোষ হয় অন্য লোকের। সব পাখি মাছ খায়, দোষ হয় মাছরাঙার!"
অন্যদিকে গত কয়েকমাস আগে রাজবংশী লোকেদের এনআরসি নোটিস পাঠায় অসম সরকার। এদিন কোচবিহারে দাঁড়িয়ে ফের এই ইস্যুতেও সরব হন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''অনেক রাজবংশী লোককে অসম থেকে এনআরসির নোটিস পাঠানো হয়েছিল। যার প্রতিবাদও জানানো হয়েছে।'' এই প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, ''অসম সরকারের কোনও অধিকার নেই বাংলার লোককে চিঠি পাঠানোর। পুলিশকেও আমার বলা থাকল, অন্য রাজ্য থেকে এসে আমার রাজ্যের লোককে যেন গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে না পারে। এটা দেখার দায়িত্ব আপনাদের।" এমনকী কোনও অপরাধীকে ধরতে এলেও পুলিশ যেন রাজ্যকে জানায়, সেই নির্দেশও দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ''কোনও ক্রিমিনালকে ধরতে আসলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলুন। আমরা ক্রিমিনালকে নিশ্চয় অ্যালাও করব না।'' কিন্তু সাধারণ মানুষ আর ক্রিমিনাল এক নয়, বলেও মন্তব্য প্রশাসনিক প্রধানের।
কোচবিহারের রাস্তায় জনসংযোগে মুখ্যমন্ত্রী। (নিজস্ব ছবি)
এদিন কোচবিহারের প্রশাসিক সভা থেকে ফের একবার এসআইআর ইস্যুতে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিএলও এবং বিএলএদের যে অসহ্য কাজের চাপ যাচ্ছে, তা নিয়েও সরব হন। কিন্তু এরপরেও যাতে রাজ্যে উন্নয়নের কাজ না বন্ধ হয়, তা আরও একবার রাজ্যের আধিকারিকদের মনে করিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
