কিংশুক প্রামাণিক, তমলুক: তৃণমূল (TMC) নেতাদের পুজোয় বাইরে বেড়াতে যাওয়া বাতিল। উৎসবের সময় এলাকায় থাকতে হবে জনপ্রতিনিধিদের। কেউ যাতে বিপদে না পড়েন সেদিকে নজর দিতে হবে। দলীয় স্তরে এই নির্দেশিকা জারি করে মমতা বন্দ্যোপাধায় (CM Mamata Banerjee) বলেছেন, ‘‘মানুষের কাজ করে দেওয়াই ভোট পলিটিক্স। মানুষ তো এই জন্য ভোট দেন। বিপদে তাঁরা যদি পাশে না পান, ভোট দেবেন কেন?’’
বুধবার নিমতৌড়িতে পূর্ব মেদিনীপুর (East Medinipur) জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে পুজোয় শান্তি বজায় রাখতে একদিকে প্রশাসন অন্যদিকে জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনার পর এবার পুজোয় ব্যাপক ভিড় হবে। সতর্ক মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের দলের অনেক এমএলএ এমপি আছেন যাঁরা পুজোর সময় বেড়াতে চলে যান। কেন যান? কোটি কোটি মানুষ তখন রাস্তায় থাকে। বাইরে থেকে লোক আসে। আচমকা কোনও বিপদ হলে কে দেখবে? আপনি যদি বিপদে পাশে না থাকেন, মানুষ থোড়াই কেয়ার করবে। আমি পুজোর সময় জীবনে কলকাতা ছাড়ি না।’’ আরও নির্দেশ, পুজোর সময় রাজ্যে যেন লোডশেডিং না হয়। রাস্তাঘাট পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এলাকায় কোনও অশান্তি যেন না হয়।
[আরও পড়ুন: থিসিস নকল করে PhD ডিগ্রি! অপসারিত কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন]
একজন জনপ্রতিনিধি কেমন হবেন সেই ব্যাখ্যা দিতে মমতা বন্দ্যোপাধায় (CM Mamata Banerjee) বলেন, ‘‘মানুষের বন্ধু হতে হবে। একজন প্রশাসকের বড় কাজ যোগ্য মানুষ হওয়া। রাফ এবং টাফ হলেও সফট হতে হবে। মানবিক মুখ নিয়ে কাজ চাই। প্রয়োজনে কাউকে বকতে হবে, আবার যে খেতে পাচ্ছে তার পাশে দাঁড়াতে হবে।’’ সরকারি দপ্তরে খরচ কমানোর দিকে নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবহণ দপ্তর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমি টাকা দেব আর তোমরা খাবে। বছরে ৭০০ কোটি ভরতুকি দিতে হয়। আর দেব না। পুরনো গাড়ি অকশন করে টাকা টাকা জোগাড় করতে হবে।’’
৪৩ হাজার ক্লাবকে পুজোয় ষাট হাজার টাকা করে অনুদান দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু ক্লাব নিজেদের ভুলে সেই অনুদান পাচ্ছে না। সেই প্রেক্ষিতে মমতা বলেন, ‘‘যাঁদের রেজিস্ট্রেশন আছে অথচ আপডেট করাননি তাঁরা টাকা পাচ্ছে না, তাঁরা দ্রুত এই কাজটা করে নিন।’’ এ ব্যাপারেও জনপ্রতিনিধিদের পাশে থাকার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে মমতা বলেন, ‘‘ক্লাবগুলোকে সবাই সাহায্য করুন। মনে রাখবেন সরকারি কাজ নিয়ম-কানুন মেনে করতে হবে। না হলে পিল খেতে হবে। আমি অবশ্য এই পিল মানে ওষুধ বোঝাচ্ছি।’’
[আরও পড়ুন: ৯ কোটি টাকা খরচ করে খুলেছিলেন মেডিক্যাল কলেজ, সিবিআইয়ের জেরার মুখে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ]
ডেঙ্গু (Dengue) বাড়াবাড়ি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। প্রশিক্ষিত কোয়াক ডাক্তারদের সাহায্য নিতে বলেন। রাজ্যে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভ গোপন করেননি মমতা। বলেন, ‘‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফে (Safe Drive Save Life) সাফল্য এসেছিল। আবার বাড়ছে কেন? পুলিশ কী করছে। ব্ল্যাক স্পটগুলোতে যান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’’ এদিনও তমলুকের বৈঠক শেষ করে আবার খড়গপুরের অতিথিশালায় ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ জঙ্গলমহলে জব ফেয়ার থেকে চাকরি পাওয়া তরুণদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে। ২০ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুরে একইভাবে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে পশ্চিমাঞ্চলের জেলার। একই কর্মসূচি ২২ তারিখ শিলিগুড়িতে।