সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়ে তরজা তুঙ্গে। কার দোষে কে বলি হল, রাজ্যের ভূমিকা ছিল কী ছিল, বা গোটা ঘটনায় বিরোধীদের কী যোগ, তা নিয়ে নানামহলের নানামত। তবে অধিকাংশই 'যোগ্য' প্রার্থীদের পরিস্থিতি ভেবেই শিউরে উঠছেন। এই পরিস্থিতিতে ফেসবুকে ইঙ্গিতবাহী পোস্ট করলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। লিখলেন, 'আজ যা আছে, কাল নাও থাকতে পারে।' ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন বিধায়ক?
চাকরি বাতিল ও যোগ্যদের পুনরায় নিয়োগের জন্য ফের পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তিনমাসের মধ্যে রাজ্যকে এই পরীক্ষা পরিচালনা করার কথা বলা হয়েছে। এখানেই প্রশ্ন, নতুন করে পড়াশোনা করে ফের চাকরি পাওয়ার ঠিক কতটা সহজ। কারণ, চাকরি হারানোয় স্বাভাবিকভাবেই চোখে অন্ধকার দেখছেন এই ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। কাল কী হবে, কীভাবে সংসার, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা চলবে, তা অজানা। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে পড়াশোনায় মনোনিবেশ কঠিন বলেই মনে করছেন অধিকাংশ। এসবের মাঝেই ফেসবুকে নিজের গল্প তুলে ধরলেন মনোরঞ্জন।
কী লিখেছেন মনোরঞ্জন? লেখেন, "বাপ্পাদার এক বন্ধু টুটুদা আমাকে ভারত টেলিভিশনে একটা নাইট গার্ডের কাজ দিয়েছিল। খানিকটা চাকরিও বলা চলে। যার মাস মাইনে ছিল ৩২৫ টাকা। চাকরিটা হবার পরে অনেকে বলেছিল এবার রিকশাটা বিক্রি করে দাও। না হলে পড়ে থেকে জং ধরে যাবে, তখন কিলো দরেও কেউ কিনবে না। কিন্তু আমি লোকের কথা শুনে রিকশাটা বিক্রি করিনি। তালা মেরে রেখে দিয়েছিলাম। চাকরি আজ আছে কাল নাও থাকতে পারে। তখন কি করব! ৮ মাস পরে ভারত টেলিভিশন তার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে বাংলা থেকে সোজা হায়দারাবাদ চলে গিয়েছিল। আমার মত আরও অনেক জন ডিউটি করতে এসে ওই তিনটে তালা দেখে মুষড়ে পড়েছিল । কেঁদে ফেলেছিল কেউ কেউ। আমি কিন্তু মুষড়ে পরিনি, কাঁদিনি। সোজা বাসায় ফিরে রিকশার তালা খুলে বেরিয়ে পড়েছিলাম চালাবার জন্য।" এরপরই তিনি লেখেন , "আজ যা আছি, আজ যা আছে , কাল তা নাও থাকতে পারে।"
বিধায়ক পোস্টের শুরুতেই লিখেছেন এই পোস্টের সঙ্গে চাকরিহারাদের কোনও যোগ নেই। তা সত্ত্বেও চাকরি বাতিল-ফের পরীক্ষা নিয়ে এই চর্চার মাঝে তৃণমূল বিধায়কের পোস্ট অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই দাবি ওয়াকিবহল মহলের।