shono
Advertisement
Supreme Court

'মুড়ি-মিছরির একদর', 'যোগ্যতা' সত্ত্বেও চাকরি হারিয়ে আক্ষেপ শিক্ষক দম্পতির

এভাবেই 'যোগ্যতা'র প্রমাণ দিয়েও চাকরি খোয়াতে হয়েছে বারাসতের কম্পিউটার, রসায়নের মেধাবী শিক্ষকদের।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:50 PM Apr 03, 2025Updated: 09:50 PM Apr 03, 2025

অর্ণব দাস, বারাসত: শিক্ষক দম্পতির নিশ্চিন্ত সংসার জীবনে ছেদ পড়ল 'সুপ্রিম' রায়ে। চাকরি হারালেন বারাসতের মেধাবী দুই শিক্ষক-শিক্ষিকা। বৃহস্পতিবার নিজেদের চাকরি বাতিলের খবর জানামাত্রই দিশেহারা হয়ে পড়েন অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সায়নী মজুমদার। এলাকায় মেধাবী ছাত্র বলেই পরিচিত অর্ঘ্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি পাশ করে ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষকতার চাকরি পান। ২০১৮ সালে কেমিস্ট্রির শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন পুরাতন বনগাঁ হাইস্কুলে। তাঁর স্ত্রী সায়নী ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকপাড়ান বেলোমনি গার্লস হাইস্কুলের ফিজিক্সের শিক্ষিকা। একপ্রকার নিশ্চিত সংসার ছিল তাঁদের। মাস গেলে স্বামী-স্ত্রীর বেতনে দিব্যি চলছিল সব। সেই নিশ্চিত জীবনে ছেদ পড়ল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের এক রায়েই জীবন বদলে গিয়েছে অর্ঘ্য-সায়নীর। অর্ঘ্য জানাচ্ছেন, "হাই কোর্টের পর সুপ্রিমকোর্টের রায়ে মুড়ি আর মিছরির দর এক হয়ে গেল! প্রশাসনের ভুলে আমার মতো যোগ্যরাও চাকরি হারালেন। এমন একটা দিন দেখতে হবে, কোনওদিন ভাবিনি।" স্ত্রী সায়নী বললেন, "অযোগ্যদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। আমরা স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই যোগ্য। অথচ আজ আমরা দু'জনেই চাকরিহারা। সংসার কীভাবে চলবে, সেটাই চিন্তার।"

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দম্পতি ছাড়াও শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নে অন্য চাকরি ছেড়ে আজ দিশাহারা অনেকে। এমনই একজন সৈকত সাহা। পাঞ্জাব থেকে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর পাশ করে কলকাতার লালবাজারে সাইবার ক্রাইম বিভাগে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার। তাই এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করে পুলিশের চাকরি ছাড়েন। স্বপ্নপূরণ করতে ২০১৮ সালে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগদান অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন হাইস্কুলে। কিন্তু ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল বাতিল নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্টে বহাল রাখায় তিনিও আজ চাকরিহারা। সৈকতবাবুর কথায়, "সিবিআই তো তদন্ত করেছে। কি হল? আমার মতো যোগ্যরাও চাকরি হারালাম।"

তাঁরই মত অরিজিৎ মজুমদারেরও স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার। তাই পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড়ে স্কুল ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি পেয়েও রসায়নের শিক্ষকতা করতে যোগ দিয়েছিলেন মধ্যমগ্রাম বয়েজ হাইস্কুলে। 'সুপ্রিম' রায়ে তিনিও আজ ২৬ হাজারের তালিকায়। এদিনের রায়ে সৈকত ছাড়াও অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন হাইস্কুলের আরেক শিক্ষিকা রুম্পা খাতুন চাকরি হারিয়েছেন। এই স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা কমবেশি চোদ্দশো, শিক্ষক-শিক্ষিকা ১৭ জন। এমনিতেই স্কুলে শূন্যপদ রয়েছে। দু'জনের চাকরি চলে যাওয়ায় আগামী দিনে স্কুলের পড়াশুনো চালানোটাই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধান শিক্ষক মনোজ ঘোষের কাছে। তাঁর কথায়, ''স্কুলের এই দুই শিক্ষক-শিক্ষিকার যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই নেই। কেমিস্ট্রি টিচার রুম্পা খাতুন না থাকায় একাদশ এবং দ্বাদশ ক্লাস করানোটা খুব সমস্যার হবে। কম্পিউটার ক্লাসের ক্ষেত্রেও তাই।''

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মুড়ি-মিছরির একদর! 'যোগ্যতা' সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়ে আক্ষেপ শিক্ষক দম্পতির।
  • একইভাবে চাকরি হারিয়েছেন বারাসতের কম্পিউটার, রসায়নের শিক্ষক।
Advertisement