দেব গোস্বামী, বোলপুর: আবহ তৈরি হয়েছিল শুক্রবার থেকেই। শান্তিনিকেতনে জমি নিয়ে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব থেকে হুঁশিয়ারি – এসবের প্রতিবাদে ‘প্রতীচী’র সামনে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা হয়েছিল আগেই। শুক্রবার থেকে সমাজের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা দফায় দফায় শান্তি মিছিল, অবস্থান বিক্ষোভ করে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আর শনিবারের প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল সম্পূর্ণ সাংস্কৃতিক। ছবি এঁকে, গান শুনিয়ে বিশ্বভারতীর (Vishva Bharati) আচরণের তীব্র নিন্দায় মুখর হন শুভাপ্রসন্ন, যোগেন চৌধুরী, গৌতম ঘোষ, কবীর সুমনরা। শান্তিনিকেতনে শনিবারের সন্ধে দেখাল প্রতিবাদের অন্য ছবি।
শনিবার সকাল থেকে শান্তিনিকেতনে (Santiniketan) ‘প্রতীচী’র সামনে জড়ো হন চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন, যোগেন চৌধুরীরা। সঙ্গে ছিল শুভাপ্রসন্নর আঁকা রবীন্দ্রনাথের ছবি। তা নিয়েই মুক্তমঞ্চে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। শামিল হন বাউল শিল্পীরাও। একতারা, দোতলা, ঝুমুরে বেজে ওঠে বিদ্রোহের মূর্চ্ছনা। দুপুরের দিকে রং, তুলি হাতে নিয়ে চিত্রশিল্পীরা শুরু করেন ছবি আঁকা। দেখা যায়, একফ্রেমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেন – দুই নোবেলজয়ীর অবয়ব দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুভাপ্রসন্ন ও যোগেন চৌধুরীর যুগলবন্দিতে অপূর্ব শিল্পের জন্ম হয়। প্রতিবাদের সম্পূর্ণ অন্য প্রতীক।
[আরও পড়ুন: লজ্জার রেকর্ড রোহিতের, ধোনির চেন্নাইয়ের সামনে ধরাশায়ী মুম্বই]
বিকেল সন্ধের দিকে ঢলে পড়তেই মঞ্চে বক্তব্য রাখতে ওঠেন গৌতম ঘোষ। শান্ত অথচ দৃঢ় কণ্ঠে, ধারাল শব্দ ব্যবহার করে প্রতিবাদের অন্য ভাষ্য তৈরি করেন তিনি। আর তারপর নির্ধারিত সময় অর্থাৎ সন্ধে ৬টা থেকে মুক্তমঞ্চে রবীন্দ্রগানে প্রতিবাদী সুর ধরেন কবীর সুমন (Kabir Suman)।
তবে বিদ্রোহ নয়, বরং প্রেমের গান গেয়েই তিনি নিশানা করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। ‘তোমার হল শুরু/আমার হল সারা’, ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’, ‘প্রাণ চায় চক্ষু না চায়’ – টানা দেড়ঘণ্টা মঞ্চে বসে এমনই সব গান গাইলেন ‘নাগরিক কবিয়াল’। প্রসঙ্গত, শুক্রবার চৈতি ঘোষাল ‘রক্তকরবী’ নাটকের মধ্যে দিয়ে বিদ্রোহে শান দিয়েছিলেন। আর শনিবার প্রতিবাদের সেই সাংস্কৃতিক ঘরানাই বজায় রাখলেন কবীর সুমন, শুভাপ্রসন্নরা।
দেখুন ভিডিও: