সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জয়নগর খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে ফাঁসির সাজা ঘোষণা। ঘটনার মাত্র ৬২ দিনের মাথায় সাজা ঘোষণা হল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, ঘটনার দ্রুত বিচার হবে। সেই মতোই তৎপরতা দেখায় রাজ্য পুলিশ। তারই ফলস্রুতি হিসেবে আদালতে দ্রুত বিচার করে সাজা ঘোষণা হল।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় চার মাস পার হয়ে গিয়েছে। তদন্তের দায়িত্বে সিবিআই থাকলেও বিচার অধরা। কবে মিলবে বিচার? সেই প্রশ্ন উঠছে বারবার। সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি চলছে। 'অভয়া' ন্যায়বিচার এখনও না পেলেও রাজ্য পুলিশের সক্রিয়তায় জয়নগরের নাবালিকা সুবিচার পেল।
আজ শুক্রবার জয়নগর কাণ্ডের ফাঁসির সাজা শোনালো বারুইপুর আদালত। এদিন এই ফাঁসির সাজা শোনানো হল দোষী মুস্তাকিন সর্দারকে। অক্টোবর মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা হয়েছিল। বারুইপুরের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় আজ এই সাজা শোনালেন।
গতকাল আদালত ওই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। ৬১ দিনের মাথায় এই মামলার বিচার হল। আরজি কর খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। সেই রেশের মধ্যেই জয়নগরের এই নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সামনে আসে। বিক্ষোভ শুরু হয় জয়নগরেও। রাত জাগো কর্মসূচিও হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জানিয়েছিলেন, এই ঘটনার দ্রুত বিচারের কথা বলেছিলেন। সিআইডি এই তদন্তের দায়িত্বভার নেয়। ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয়।
অক্টোবর মাসের শুরুর দিয়ে জয়নগরের মহিষমারি এলাকায় এই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছিল। ধৃত মুস্তাকিন সর্দারের বিরুদ্ধে সব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যেতে থাকে। বারুইপুর মহকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে এই মামলা হয়। পসকো আইনে মামলার শুনানি চলে। ৩০ অক্টোবর আদালতে সিটের তরফ থেকে চার্জশিট জমা করা হয়। মামলা চলাকালীন ৩৬ জন সাক্ষ্য দেন। রাজ্যের অন্যতম ঘটনা এই জয়নগর কাণ্ড। দ্রুত এই মামলার বিচার চলতে থাকে। ৬২ দিনের মাথায় এই রায় শোনানো হল।
সিটের তদন্তকারীরা দ্রুত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রমাণ দাখিল করা হয় আদালতে। সেই ভিত্তিতেই দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া চলে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে। এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনও করা হয়। আরজি কর কাণ্ডের পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদিও অভিযুক্তকে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সিবিআই তদন্তে ওই ঘটনায় আর কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। তার মধ্যে এই ঘটনায় আরও চাপ বাড়ে। জয়নগর কাণ্ডে তদন্ত ছিল আরও চ্যালেঞ্জিং। এদিন সকাল থেকেই আদালত চত্বরে প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলেন। নিরাপত্তাও কঠোর করা হয়েছিল। সকালেই হাজির করা হয় মুস্তাকিন সর্দারকে। দুপুরের পর তাকে আদালত ফাঁসির সাজা শোনানো হল। রায় শুনে কেঁদে ফেলেন ওই নাবালিকার বাবা-মা।