টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: চোলাই মদ রুখতে এবার রাজ্যজুড়ে পৃথক থানা তৈরি করার পথে হাটছে রাজ্য আবগারি দপ্তর৷ সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নির্দেশিকা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের আবগারি দপ্তরের কর্তারা৷
[পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত চোলাই কারবারীদের]
ইতিমধ্যেই রাজ্য আবগারি দপ্তর জেলাগুলি থেকে চোলাই মদের সমস্যা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। সেই সমীক্ষা রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই এই থানাগুলি তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য আবগারি দপ্তরের কমিশনার রানধীর কুমার। তিনি জানিয়েছেন, ওই থানাগুলিতে আবগারি দপ্তরের সাব-ইনস্পেক্টরদের সঙ্গে থাকবে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী৷ চলবে দফায় দফায় অভিযান৷ নিয়মিত অভিযান চললে চোলাই মদের রমরমা ব্যবসা কমবে বলে তিনি আশাবাদী৷
আবগারি দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, এপ্রিল মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত আর্থিক বছরে দেশি মদ বিক্রি করে সরকার প্রতিমাসে বাঁকুড়া জেলা থেকে এক কোটি থেকে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। দেশি মদ বিক্রির লাইসেন্স দেওয়ার কাজ শুরু হলে রাজস্বের পরিমাণ আরও বাড়বে৷ কিন্তু, বেআইনি মদ বিক্রির ও চোলাই মদের দাপটে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্য সরকার৷ বাঁকুড়া জেলা আবগারি দপ্তরের কর্তা মহম্মদ সইদুল্লা বলেন, ‘‘বেআইনিভাবে তৈরি চোলাই মদ কখনও সরকার অনুমোদিত দেশি মদের বিকল্প হতে পারে না। দেশি মদের বোতলের ছিপি সিল করা থাকে। সেই সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে কেমিস্টের উপস্থিতিতে অ্যালকোহল মিটার টেস্ট করে দেশি মদ তৈরি করা হয়। মেশিনের সাহায্যে বোতলগুলি ভালে ভাবে পরিষ্কার করা হয়।” কিন্তু স্থানীয়ভাবে খোলা আকাশের নিচে ভাঁটিতে তৈরি চোলাই মদ তৈরিতে নিশাদল, ধুরা বীজ ছাড়াও ছত্রাক মেশানো হয়ে থাকে৷ এতে অল্প পরিমাণ চোলাই মদ পান করলেই বেশি নেশা হয়৷ সেই তুলনায় ওই পরিমাণ দেশি মদে নেশা হয় কম৷
[কর্মস্থলে যাওয়ার পথে কাকা ও ভাইপোকে পিষে দিল বাস]
সরকার অনুমোদিত ৬০০ মিলিলিটার দেশি মদের দাম যেখানে ৪৬ টাকা, সেখানে চোলাই মদ অর্ধেক দামে বাজারে বিক্রি হয়। জেলার আবগারি দপ্তরের সুপারিন্টেনডেন্ট পিনাকী দাস বলেন, ‘‘আবগারি দপ্তরের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা একান্তই জরুরি। তবে সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও সপ্তাহের সাত দিনই আবগারি দপ্তরের কর্মীরা হানা দেওয়ায় চোলাই মদ বিক্রি ও ভাঁটি বন্ধে আমাদের জেলায় সাফল্যের হার বেশি।’’ তবে, আবগারি দপ্তরের পৃথক থানা তৈরি করলে সেই সাফল্যের হার আরও বাড়বে বলে মনে করছেন কর্তারা। বর্তমানে শুধু মাত্র চোলাই মদই নয় পোস্ত, গাঁজা-সহ একাধিক মাদক দ্রব্যের চাষ নিয়ন্ত্রণ করতে নজরদারি চালাতে হচ্ছে আবগারি দপ্তরকে। অথচ পরিকাঠামো না থাকার অভিযানে নেমে হেনস্থা হতে হয় আবগারি দপ্তরের কর্তাদের। পৃথক থানা আর অস্ত্রধারী পুলিশ কর্মীদের পেলে সেই সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
The post বেআইনি মদের কারবার ঠেকাতে এবার রাজ্যজুড়ে আলাদা থানা আবগারি দপ্তরের appeared first on Sangbad Pratidin.
