ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকার প্রথম ডোজ নিতেই হবে। অন্যথা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা (Corona Vaccine) নাও মিলতে পারে। রাজ্যের অন্তত ২ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীকে এমন বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্যভবন। ঘটনার সূত্রপাত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের এক পদক্ষেপ। দেশের সব রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এমন বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। একই বক্তব্য নীতি আয়োগ কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির প্রধানেরও।
[আরও পড়ুন: ‘কোথায় দাঁড়াবেন বুঝতে পারছেন না’, নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়া নিয়ে মমতাকে খোঁচা শাহর]
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বক্তব্য, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণের জন্য এক মাস বরাদ্দ করা হয়েছিল। আশা ছিল, এই সময়কালের মধ্যে দেশের ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকাকরণের কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে। তারপর ৩ কোটি ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কর ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বিতীয় ডোজটি দেওয়া হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মুম্বই-সহ বেশ কিছু রাজ্যে টিকাকরণের গতি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কোউইন অ্যাপ নিয়ে যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনই স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের মধ্যেও অনীহা দেখা দিচ্ছে। টিকা যতদিন আসেনি সেই সময় যতটা আগ্রহ ছিল, পড়ে তার বিপরীত অবস্থান। তবে এরমধ্যেই রুপোলি রেখা দেখা গিয়েছে ওড়িশায়। রাজ্যের টিকাকরণ ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেই উদাহরণকে সামনে রেখে সব রাজ্যগুলিকে টিকাকরণে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব।
এই অবস্থায় রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর ঠিক করেছে, ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্তত একটি ডোজ নিতেই হবে, অন্যথায় তাঁরা অগ্রাধিকারের সুযোগ পাবেন না। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর ইতিমধ্যে টিকাকরণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। যথেষ্ট সংখ্যক কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ড টিকা আনা হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ড. অজয় চক্রবর্তী ইতিমধ্যে ভিডিও বার্তায় স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্রুত টিকাকরণের আবেদন করেছেন। স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রাথমিক তথ্য বলছে এদিন পর্যন্ত ৫৮% স্বাস্থ্যকর্মী টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। ১৬ জানুয়ারি টিকাকরণ শুরু হয়েছিল। ওইদিন যাঁরা রাজ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার তাঁরা দ্বিতীয় দফার টিকা পাবেন। তারপরই তাঁদের স্মার্টফোনে পৌঁছে যাবে ডিজিটাল সার্টিফিকেট। প্রয়োজনে হার্ড কপিও দেওয়া হতে পারে। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদেরও টিকাকরণ শুরু হয়েছে।
টিকাকরণ কর্মসূচির ২১তম দিনে একজনেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী এই খবর জানান। এদিন রাজ্যের ৬১২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা পেয়েছেন ২৭,৩৮২ জন। অর্থাৎ ৪৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এঁদের মধ্যে স্বাস্থ্য এবং ফ্রন্টলাইন – দু’ধরনের কর্মী রয়েছেন। বিগত দিনগুলির মতো এদিনও কো-উইন এর সমস্যায় টিকা কর্মসূচি ব্যাঘাত হয়েছে। কো ভ্যাকসিন ও কোভিশিল্ড দু’ধরনের ভ্যাকসিন টিকাকরণ হয়েছে।