shono
Advertisement

আতঙ্কের মাঝে করোনা প্রতিষেধকের টোপ! ২০০০ জনকে ওষুধ খাইয়ে ধৃত তিন চিকিৎসক

অভিযান চালিয়ে বেআইনি ক্যাম্প ভেঙে দিল পুলিশ। The post আতঙ্কের মাঝে করোনা প্রতিষেধকের টোপ! ২০০০ জনকে ওষুধ খাইয়ে ধৃত তিন চিকিৎসক appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:18 PM Mar 13, 2020Updated: 08:24 PM Mar 13, 2020

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: হু হু করে মারণ জীবাণুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোখা যাচ্ছে না। মোকাবিলায় রীতিমতো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রতিষেধক আবিষ্কারে জোর দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এমনই সংকটের সময়ে শুরু হলো করোনা ভাইরাসের ‘প্রতিষেধক’ দেওয়ার কাজ। তাও আবার এই বাংলায়! প্রতিষেধক দেওয়া হবে শুনেই সকাল থেকে ভিড় জমে যায় আসানসোলের হিরাপুরের ৮ নম্বর বস্তিতে। তবে তা বেশিক্ষণ চলেনি। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছে ভেঙে দেয় শিবির। ততক্ষণে অবশ্য প্রতিষেধক নেওয়া হয়ে গেছে হাজার জনের।

Advertisement

৮ নম্বর বস্তি এলাকায় শুক্রবার বসে করোনা ‘প্রতিষেধক’ শিবির। দেখা যায়, কালো বোর্ডে চকে হিন্দিতে লেখা – ‘করোনা ভাইরাস-কা প্রতিষেধক’। টেবিলে রাখা সিরাপের বোতলের মধ্যে তরল ওষুধ। তার গায়ে সাঁটা লেবেল – হোমিওপ্যাথি ২০০ এইচপিআই।

 

চেয়ারে তিনজন বয়স্ক মানুষ বসে ছোট,বড় সবার মুখে ঢেলে দিচ্ছেন দু ঢাকনা করে ওষুধ। আর তা নিতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় এদিন। একটি সামাজিক সংগঠন রীতিমতো শিবির করে এলাকার বাসিন্দাদের ওষুধ খাওয়ানোর কাজ করছিল। সেই শিবিরে ছিলেন তিন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক – বিহারের অমরজিৎ সিং, রাম সহায় প্রসাদ ও আসানসোলের উত্তম কুমার গুপ্ত। তার মধ্যে অমরজিৎ নিজেকে বিহারের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বলে দাবি করেছেন। উত্তম কুমার গুপ্ত আসানসোল পুরনিগমের চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক। আর রাম সহায় প্রসাদের প্রাইভেট  চেম্বার আছে।

[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্ক: বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থগিত বায়োমেট্রিক হাজিরা ও সেমিনার]

এলাকায় করোনা প্রতিষেধক শিবিরের খবর পেয়ে হিরাপুর থানার পুলিশ এলাকায় যায়।  উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি দেখতে চান। কিন্তু, তা দেখাতে না পারায় পুলিশ শিবির তৎক্ষণাৎ বন্ধ করে দেয়। শিবিরে ওষুধ খেতে এসে লাইনে দাঁড়ানো লোকজনকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যতক্ষণে পুলিশ সেখানে পুলিশ আসে ততক্ষণে ৮ নং বস্তি সহ আশপাশের এলাকায় হাজার দুয়েক মানুষ ওই হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেয়ে নিয়েছেন!

তিন চিকিৎসক বলেন, “আমরা যে ওষুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিলাম, তাতে মানুষের শরীরে ইমিউনিটি পাওয়ার বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। লোকেরা করেনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন না।” একই দাবি এই শিবিরের উদ্যোক্তা তথা সামাজিক সংগঠনের কর্ণধার ব্যাস কুশুওয়ারার। তিনি বলেন, “১২ বছর ধরে শিবির করছি। এর আগে সোয়াইন ফ্লুয়ের সময় একইভাবে শিবির করেছিলাম। এবারেরও করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক কাটাতে এই আয়োজন। ওই তিন চিকিৎসক আমাকে বলেছেন, এই রোগের ওষুধ আছে। কিন্তু পুলিশ এসে বন্ধ করে দিল।”

[আরও পড়ুন: কখনও চোখে দেখেননি মমতাকে, মুখ্যমন্ত্রীর মূর্তি বানিয়ে দেবীজ্ঞানে পুজো করেন এই বৃদ্ধ]

আসানসোল পুরনিগমের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার দীপক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এইভাবে এই ধরনের শিবির করা যায়না। স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি লাগে। ওই চিকিৎসকদের আমি সতর্ক করেছি।” মেয়রকেও জানানো হয়েছে। মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানান। পশ্চিম বর্ধমানের ডেপুটি স্বাস্থ্য আধিকারিক অনুরাধা দেবের কথায়, “আমাদের কাছে এখনও কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনও অ্যান্টিডট ওষুধ আসেনি। আমরা শুধু সচেতন করছি। কিন্তু এই শিবিরের পেছনে যদি অসৎ উদ্দেশ্য বা ব্যবসা থাকে, তবে আমরা খতিয়ে দেখব।”

The post আতঙ্কের মাঝে করোনা প্রতিষেধকের টোপ! ২০০০ জনকে ওষুধ খাইয়ে ধৃত তিন চিকিৎসক appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement