সৌরভ মাজি, বর্ধমান: শেষ যাত্রার জন্য সাজিয়ে তোলা হয়েছে তাকে। কপালে চন্দনের ফোঁটা, গলায় রয়েছে ফুলের মালা। গোছা ধূপ জ্বলছে খাটিয়ার পাশে। পাশে খোল-করতাল নিয়ে চলছে হরিনাম সংকীর্তন। তবে ইনি এলাকার কোনও গণ্যমান্য ব্যক্তি নন। বিদ্যুতের তারে ধাক্কা খেয়ে মারা যাওয়া একটি হনুমান। তার শোকেই কাতর স্থানীয়রা।
পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসির গোহগ্রামে পবনপুত্রের মৃত্যুতে শোকের পরিবেশ। শিবচতুর্দশীর দিন গ্রামে হনুমানের ‘অপমৃত্যুতে’ শোকের ছায়া ঘরে ঘরে। একজোট হয়েছেন সারা গ্রামের মানুষ। জাঁকজমক করে পবনপুত্রের শেষকৃত্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। গ্রামবাসীরা জানান, কয়েকদিন ধরে গ্রামে একটি হনুমান গাছে গাছে ঘুরছিল। খাবারের খোঁজে এসেছিল। তাতে অবশ্য বিরক্ত হতেন না গ্রামবাসীরা। প্রয়োজনে কেউ খাবারও ছুঁড়ে দিতেন তাকে। গ্রামবাসী মদন ঘোষ জানান, এদিন সকালে এক ডাল থেকে অন্য ডালে লাফালাফি করার সময় বিদ্যুতের লাইনে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে যায় হনুমানটি। কয়েকজন তা দেখে ছুটে যান। ততক্ষণে নেতিয়ে পড়ে মৃত্যু হয় পূর্ণবয়স্ক হনুমানটির।
[আরও পড়ুন:তন্ত্রসাধনার জন্য গৃহকর্তাকে খুনের চেষ্টা! স্ত্রী-মেয়ের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচলেন বৃদ্ধ]
এরপরই গ্রামবাসীরা ঠিক করেন, সামান্য কবর নয়, সমারোহেই শেষকৃত্য করবেন তাংরা। গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে ফুলের মালা,কাপড় সংগ্রহ করেন। ফুলের মালা পরিয়ে, কাপড়ে ঢাকা দেওয়া হয় পবনপুত্রের দেহে। নাম সংকীর্তনের দলও আনা হয়। গ্রামের শিবমন্দিরের সামনের গ্রামবাসীরা হনুমানের দেহ রেখে নাম সংকীর্তনের আয়োজন করে। বেশ কিছু সময় ধরে চলে হরিনামও ।
এরপর তার দেহ কাঁধে তুলে গ্রাম পরিক্রমাও করা হয়। শেষে সমাধিস্থ করা হয়। মদনবাবু জানান, তাঁরা ঠিক করেছেন সমাধির উপরে হনুমান মন্দির গড়বেন তাঁরা। গ্রামবাসী সকলে মিলে চাঁদা তুলে সেই মন্দির গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গ্রামে বা এলাকার কোথাও হনুমান মন্দির না থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেন তারা। তাঁদের গ্রামেই প্রথম হনুমান মন্দির গড়া হবে। নিত্যপুজোরও ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
দেখুন ভিডিও:
The post বিদ্যুতের তারের ছোঁয়ায় ‘অপমৃত্যু’ হনুমানের, হরিনাম সংকীর্তনে শেষ বিদায় পবনপুত্রকে appeared first on Sangbad Pratidin.
