সুব্রত বিশ্বাস: যত্রতত্র বসত বাটি, মহাকাল ঘোর সন্ন্যাসী। সর্বব্যাপী মহাকাল। তাই যে যেখানে পেরেছে শিবের একটা মন্দির গড়ে দিয়েছে। তা সে সড়কের ধারে হোক বা স্টেশন কিংবা রেল লাইনের ধারে। এক টুকরো জায়াগাতেই মহেশ্বরের অধিষ্ঠান। আজ, শনিবার মহাশিবরাত্রি (Mahashivratri)। শিবের আরাধনায় মেতে উঠবে ভক্তের দল। ডমরু থেকে সিঙ্গায় ফুঁ, গাঁজায় টান- বাকি থাকবে না কিছুই। কিন্তু দেবাদিদেবের এই মহোৎসব বেজায় ভাবনায় ফেলে দিয়েছে রেলকে।
কেন? কারণ, স্টেশনগুলিতে প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্ত থেকে লাইন ধারে বাবা ভোলেনাথের মন্দির। দু’একটি নয়, কয়েকশো বললেও কম বলা হয়। আজ রাতে সে সব মন্দিরে পীণাকপানির আরাধনায় যাতে কোনওরকম বিপত্তি না ঘটে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে একাধিক বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছে রেল।
[আরও পড়ুন: ‘চাকরি যাবে না তো?’, বাগদার ‘সৎ রঞ্জনে’র গ্রেপ্তারিতে আশঙ্কায় মামাভাগ্নে গ্রাম]
২০১৮ সালে অমৃতসরে দশেরার দিন রাবণ বধ দেখতে গিয়ে ৬১জন ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন। রেলের ইতিহাসের সে এক কালো দিন। রাতে শিবপুজোয় ভক্তের ভিড় যাতে লাইনে চলে না আসে তা দেখতে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে রেল। হাওড়ার ডিআরএম মণীশ জৈন জানান, অবাঞ্ছিত কোনওরকম ঘটনা যাতে না ঘটে, তা দেখতে আরপিএফ, স্টেশন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি লাইনে বিপদসঙ্কুল এলাকার মধ্যে যাতে ভিড় না জমে, তা দেখবে ওই কর্মীরা।
শুধু ভক্তকূল সচেতন হলেই চলবে না, সচেতন থাকতে হবে রেলকর্মীদেরও। শিয়ালদহের ডিআরএম এসপি সিং বলেন, ট্রেনের চালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, লাইনের ধার ঘেঁষা মন্দিরগুলি ও মানুষের ভিড় দেখলে আগের থেকেই হর্ন বাজানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে ট্রেনের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হতে পরেন মানুষজন। পাশাপাশি মন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে পুজোর আয়োজকদের প্রতি রেল আবেদন করেছে, যাতে লাইনের ধার ঘেঁষা পুজোগুলোতে বেশি আলো না জ্বালানো হয়। যাতে চালকের ট্রেন চালানোয় বিঘ্ন না ঘটে। পাশাপাশি শিবের জনপ্রিয় স্থানগুলিতে প্রচুর জনসমাগম হবে। তা নিয়েও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরপিএফকে। বর্ধমান, কালনা, তারকেশ্বর, নদিয়ার রাজরাজেশ্বর শিব মন্দিরগুলিতে যেতে গেলে মূল ফটক রেল স্টেশন। ভরসা ট্রেনই। ফলে সেই তীর্থযাত্রাও যাতে মসৃণ হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে বলেছে রেল কর্তৃপক্ষ।