সুবীর দাস, কল্যাণী: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ছাত্রমৃত্যুতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও তিনজনকে। তার মধ্যে একজন কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। ঘটনার দিন তিনিই ডিন অফ স্টুডেন্টসকে ফোনে সমস্ত কিছু জানিয়েছিলেন। নদিয়ার (Nadia) হরিণঘাটার সেই ছাত্র সত্যব্রত রায়কে শুক্রবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে গ্রেপ্তার করে যাদবপুর থানার পুলিশ। টেলিভিশনে ছেলের গ্রেপ্তারির খবর দেখে মাথায় হাত দরিদ্র পরিবারের। মা-বাবা, প্রতিবেশী কেউ বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে এমন মেধাবী ছেলে র্যাগিংয়ের মতো জঘন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।
হরিণঘাটা (Haringhata) পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সন্তোষপুরের বাসিন্দা সত্যব্রত রায়। যাদবপুরের কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। বাবা কানাই রায় সামান্য ঝালমুড়ি বিক্রেতা। হরিণঘাটার মোহনপুর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ঝালমুড়ি, পেয়ারা মাখা ইত্যাদি বিক্রি করেন। মা রুমা রায় বাড়িতে সেলাই মেশিনে জামাকাপড় সেলাইয়ের কাজ করে।
[আরও পড়ুন: “দিব্যাঙ্গ ছাত্রকে পর্যন্ত র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়েছে”, যাদবপুর কাণ্ডে বিস্ফোরক অরিত্র দত্তবণিক ]
সত্যব্রতর একমাত্র ভাই দেবজিৎ রায়। বাড়িতে একটি ছোট সবজির দোকানে সবজি বিক্রি করে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পড়ুয়া, জেলারই ছেলের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে সত্যব্রত রায়ের খোঁজ পায় পুলিশের। তাঁকে শুক্রবার ডেকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের পর কথাবার্তায় অসংগতি মেলায় সত্যব্রতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কম্পিউটার সায়েন্সের এই ছাত্রের দাবি ছিল, ঘটনার দিন রাত ১০টা নাগাদ বিপদ বুঝে তিনি ডিনকে ফোনে সব জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও প্রাণ গিয়েছে প্রথম বর্ষের ছাত্রের। সেই কারণে সত্যব্রতকে আরও জেরা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাই গ্রেপ্তার।
[আরও পড়ুন: লোকসভায় আমেঠি থেকেই লড়বেন রাহুল, জল্পনার মাঝে দাবি উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির]
সেই খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না, মেধাবী ছেলে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। এলাকাবাসীদেরও একই বক্তব্য। সত্যব্রত এলাকায় ভাল ছেলে বলেই জানেন সকলে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাবা-মা খুব কষ্ট করে দুই ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন। তারপর এই খবরে তাঁদের ভেঙে পড়া স্বাভাবিক। ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কী হবে তাহলে? এই চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছে তাঁদের।
