নব্যেন্দু হাজরা: রেড রোডের কার্নিভ্যাল তাক লাগিয়েছে গোটা বিশ্বকে। কলকাতার দুর্গাপুজো হয়ে উঠেছে বিশ্বজনীন। আর এবার তৈরি হচ্ছে চন্দননগর। জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagaddhatri Puja) বিসর্জনের শোভাযাত্রাকে জমকালো করতে কাউন্টডাউন শুরু সেখানেও। তৈরি হচ্ছে নানা থিমের আলো। চলছে প্রশাসনিক প্রস্তুতিও। দিন কুড়ি পর পুজো শুরু সেখানেও। জোরকদমে চলছে মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কাজ। করোনার কারণে দু’বছর ঐতিহ্যমণ্ডিত শোভাযাত্রা হয়নি এখানে। আড়ম্বরও ছিল কিছুটা কম। তবে এবার ফের জাঁকজমক করেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতীক্ষার দিন গুনছেন শহরবাসী।
পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এখানকার পুজো পরিচালনা করে চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ কারা করবে তারাই ঠিক করে। যা শোনা যাচ্ছে, অন্যান্যবার শোভাযাত্রায় আবেদন করলেই সাধারণত তার ছাড়পত্র মিলত। কিন্তু যেহেতু এবার দু’বছর পর শোভাযাত্রা তাই কিছু বিধি আরোপ করা হচ্ছে। আপাতত ঠিক হয়েছে, ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ সালে যে সমস্ত পুজো কমিটির জুবিলি বছর, তাদের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করার ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া যে বারোয়ারির বয়স ১০০ পার করেছে, তারা পাবে, আর ২০১৯ সালের আগের পাঁচ বছর যে সমস্ত পুজোকমিটি ধারাবাহিকভাবে শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে, তারা ছাড়পত্র পাবে। সব মিলিয়ে এবার প্রায় ৬৪টির মতো পুজো জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রায় অংশ নিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: সোদপুরে রেললাইনের উপর বিকল লরি, আপ ও ডাউন লাইনে ব্যাহত ট্রেন চলাচল]
অন্যবার এই সংখ্যাটা ৭২-৭৪-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করে। কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু গত দু’বছর করোনার কারণে শোভাযাত্রা হয়নি, তাই যে পুজোগুলোর সেই সময় জুবিলি বছর ছিল তাদের এবার অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রাচীন পুজো এবং ধারাবাহিকভাবে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করা পুজোগুলোও এবার সুযোগ পাচ্ছে। সর্বাধিক চারটি লরি সাজিয়ে কোনও পুজো কমিটি বেরোতে পারবে। তারমধ্যে একটি লরিতে থাকবে প্রতিমা।
একসময়ের ফরাসি উপনিবেশ বরাবরই আলোর শহর হিসাবেই পরিচিত। এখানকার জগদ্ধাত্রী নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা জগৎবিখ্যাত। কিন্তু গত দু’বছর তার স্বাদ নিতে পারেননি দেশ-বিদেশের মানুষ। তাই এবার এখানকার শোভাযাত্রায় গোটা বিশ্বকে চমক দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে চন্দননগর। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ সাউ বলেন, ‘‘যেহেতু গত দু’বছর শোভাযাত্রা হয়নি, তাই এবার বিসর্জনের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কয়েকটি মাপকাঠি ঠিক করা হয়েছে। না হলে গত দু’বছর যে পুজোগুলোর জুবিলি বছর গিয়েছে, তারা এবার অংশ নিতে পারত না। তবে এবার এখানকার পুজো সকলকে তাক লাগাবে।’’