সুবীর দাস, কল্যাণী: জন্ম থেকেই ছিল না মল ও যোনিদ্বার। গতবছর কৃত্রিম যোনিদ্বার তৈরি করে নজির গড়ে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু হাসপাতাল। সেই সফল অস্ত্রোপচারের পর মাতৃত্বের স্বাদ পেলেন তরুণী। মঙ্গলবার রাতে সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। খুশির হাওয়া পরিবারে। সঙ্গে চিকিৎসকরাও জানাচ্ছেন, তরুণীর সফল অস্ত্রোপচার ও সন্তানপ্রসবে খুশি তাঁরাও।
তরুণীর জন্মের পর থেকে একাধিক শারীরিক জটিলতা দেখা যায়। ২০১৩ সালে ১০ বছর বয়সে তাঁর মলদ্বারের চিকিৎসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু কে জানত, আরও একটি সমস্যা আসতে চলেছে। কিশোরী বয়স আসতেই ধরা পড়ে যে তৈরি হয়নি যোনিপথ। ফের মলদ্বারের অস্ত্রোপচার করতে এসএসকেএমের চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয় পরিবার।
তিনি কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক মৃগাঙ্কমৌলি সাহার কাছে পাঠান। একাধিক পরীক্ষার পর কৃত্রিম যোনিদ্বার তৈরির সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারে যোনিদ্বারের সঙ্গে জরায়ুর সংযোগ করা হয়। মা হওয়ার জন্য এই সংযোগ জরুরি। সেই অস্ত্রোপচারে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পান পূর্ব বর্ধমানের ধাত্রিগ্রামের বছর ২১-এর তরুণী। এর পর গতকাল রাতে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালেই পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি।
চিকিৎসক মৃগাঙ্কমৌলি বলেন, "কৃত্রিম যোনিদ্বার তৈরির অস্ত্রোপচার সত্যিই খুব কঠিন ছিল। ২০২২ সালে ধরা পড়ে তরুণীর যোনিদ্বার নেই। পরীক্ষার পর তা জানার পরই ৮-৯ জনের একটি দল তৈরি করে কৃত্রিম যোনিদ্বার তৈরির সিদ্ধান্ত নিই। এই অস্ত্রোপচারে জরায়ুর মুখের সঙ্গে যোনিদ্বার যুক্ত করা হয়। চিকিৎসা পরিভাষায় এই অস্ত্রোপচারকে 'ভ্যাজিনোপ্লাস্টি' বলে। এই অস্ত্রোপচার অনেকেরই হয়। তবে চিকিৎসার পর গর্ভধারণ বিরলতম ব্যাপার। ১ লাখ মানুষের মধ্যে ১ জনের ক্ষেত্রে তা হয়। এটা আমাদের কাছে সাফল্য তো বটেই, আনন্দেরও।" তরুণীর মা বলেন, "ওর ছোট থেকেই সমস্যা ছিল। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে একটা অপারেশন হয়। কল্যাণীতে হয় আর একটা। মঙ্গলবার সন্তানের জন্ম দেয়। এখন সুস্থ আছে।"