স্টাফ রিপোর্টার, কোচবিহার: পুঞ্চ টু দিনহাটা (Dinhata)। হাজির রেহানা বসির। মঙ্গলবার দিনহাটার মহকুমা শাসক হিসাবে দায়িত্ব নিলেন তিনি। জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmiar) পুঞ্চ জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সালোয়া থেকে আইএএস অফিসার হয়ে তিনি দেশবাসীর নজর কেড়েছিলেন আগেই। ২০১৮ সালে সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় ১৮৭ র্যাঙ্ক করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এবার সেই ‘কাশ্মীর কন্যা’ দিনহাটার মহকুমা শাসক (SDO) হিসাবে হিমাদ্রি সরকারের স্থানে যোগদান করলেন।
এদিন দিনহাটার সদ্য প্রাক্তন মহকুমাশাসক কাশ্মীরি এই কন্যাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। মহকুমা শাসকের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর কাছ থেকে উন্নত পরিষেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, আইএএস রেহানার লড়াকু মনোভাব এবং অভিজ্ঞতা মহকুমার পড়ুয়াদের উদবুদ্ধ করবে বলে অনুমান স্থানীয়দের। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যাতে মিশে যেতে পারেন, তার জন্য চেষ্টার কসুর করছেন না রেহানাও। এদিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান তিনি, বাংলা শিখছেন। কয়েকদিনের মধ্যে এই ভাষা শিখে বাংলাতেই সবার সঙ্গে কথা বলবেন।
[আরও পড়ুন: দার্জিলিং সফরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, এক মঞ্চে দেখা যেতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে]
কাশ্মীর কন্যা রেহানা নিজের জেলার প্রথম মহিলা আইএএস (IAS)। তাঁর প্রথম পোস্টিং কোচবিহার (Cooch Behar) শহরের দিনহাটা মহকুমায়। বোমা-বন্দুক ও জঙ্গিদের সংঘর্ষে বারবার তাঁর জেলা দেশের শিরোনামে উঠে এসেছে। সেখান থেকে তাঁর এই সফর কখনওই সহজ ছিল না। ২০০৬ সালে বাবাকে হারানোর পরেও থেমে যায়নি তাঁর লড়াই। কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে থেকে এমবিবিএস পড়াশোনা শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর দাদা আমির বশির ২০১৭ সালে ইউপিএসি পরীক্ষায় আইএএসে ৮৪৩ র্যাঙ্ক করেন। যা দেখে অনুপ্রাণিত হন রেহানা। তারপরই তিনি আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেন।
প্রথমবারেই কেল্লাফতে! দাদার থেকেও ভাল ফল করেন তিনি। এরপর আর ঘুরে তাকাতে হয়নি। ডাক্তারি পড়তে পড়তে রেহানার একেবারে আইএএস অফিসার হওয়া নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল। কিন্তু মানুষের সেবার কাজে ব্রতী রেহানা বলেন, “কেবল ডাক্তারি করে জনগণের ঠিকমতো সেবা করা যাবে না। আমি যখন ইন্টার্নশিপ করছিলাম, তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে প্রশাসনের অংশ হিসাবে মানুষকে আরও ভালভাবে সেবা করতে পারি। একজন ডাক্তার হিসেবে শুধুমাত্র একজন রোগীর চিকিৎসা করতে পারি কিন্তু তার সমস্যাগুলো সামগ্রিকভাবে সমাধান করতে পারি না। অনেকগুলি সমস্যা রয়েছে, যেমন বিশুদ্ধ পানীয় জলের অ্যাক্সেস, সঠিক রাস্তা, ভাল খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি। এই চাকরির মাধ্যমে আমি আরও ভালভাবে মানুষের সেবা করতে পারব।” তাই আইএএস অফিসারের পদই বেছে নেন রেহানা।