shono
Advertisement
Kidney Racket

দুধ ব্যবসা থেকে কিডনি পাচারের বেআইনি আয়ে প্রাসাদসম বাড়ি, কোটি টাকার মালিক 'সুদখোর' শীতল!

করোনা কাল থেকে সুদের কারবার বাড়তে থাকে শীতলের।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 07:01 PM Apr 04, 2025Updated: 07:07 PM Apr 04, 2025

অর্ণব দাস, বারাসত: পারিবারের ছিল দুধের ব্যবসা। ১২ থেকে ১৫ টি গরু। সেই দুধ বেচেই 'দুধেভাতে' ছিল অশোকনগরের কিডনি পাচার চক্রের অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ ঘোষ ওরফে 'সুদখোর' শীতলের পরিবার। চোখ ধাঁধিয়ে যেত তার প্রাসাদোপম বাড়ি দেখে! তার যেমন সুন্দর জানলার কাচ, তেমন তার ফলস সিলিং! কিন্তু এহেন পেল্লাই বাড়ি তৈরির নেপথ্যে যে কিডনি পাচারের চড়া 'সুদ', তা এতদিন কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। অশোকনগরের কিডনি পাচারের বিষয়টি প্রকাশ্যে না এলে তা জানাও যেত না হয়ত। শুধু কি এই বিলাসবহুল বাড়ি, গলার '৩৩ লাখি' সোনার চেন, অন্যান্য গয়না মিলিয়ে কোটি টাকার সম্পত্তি শীতলের! তদন্তে নেমে এমন সব তথ্য পেয়ে চোখ কপালে দুঁদে পুলিশকর্তাদেরও।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শীতলদের বাড়িতে ছিল কমবেশি ১২-১৫টি গরু। দুধ বিক্রি করেই সংসার চালাতেন তাঁরা। কিন্তু বছর ৬-৭ আগে ঘটে বিপত্তি। গরুর লাথিতে একটি চোখ গুরুতর জখম হয় শীতলের। তারপরই গরু বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন শীতল। সেই টাকায় শুরু হয় সুদের কারবার। পাড়ার মধ্যেই প্রথমে সুদের ব্যবসায় হাতেখড়ি হয় শীতলের।

প্রাসাদোপম বাড়ি দেখলে চোখ কপালে উঠত স্থানীয় বাসিন্দাদের। নিজস্ব ছবি।

২০২০ সালে করোনার প্রকোপে লকডাউন শুরু, সেই সুযোগে তাঁর সুদের ব্যবসাও বাড়ে রমরমিয়ে। সূত্রের খবর, এই করোনার সময়কালেই টাকা শোধ করতে না পাড়ায় চাপ দিয়ে একজনের কিডনি বিক্রি করানো দিয়ে সূচনা। তখনই শীতল বুঝে যায়, ধারের টাকা উদ্ধারের জন্য কিডনি বিক্রি তাঁর কাছে 'ইনস্যুরেন্স'। সঙ্গে ন্যূনতম ২০ লক্ষ টাকায় কিডনি বিক্রি করলে দালাল হিসেবে ১৫-১৬ লক্ষ টাকা লাভ। ব্যস, তার উত্থান আর কে আটকায়? গলায় '৩৩ লাখি' সোনার চেন সবাইকে দেখিয়ে বিত্তের অহং জাহির করত।

অশোকনগরের 'সুদখোর' শীতল।

কিন্তু এতদিন বাদে এই ঘটনা প্রকাশ্যে এল কেন? উত্তর অবশ্য তাজ্জব হওয়ার মতো। যে কিডনি দিয়েছে, তাকেই শেষ মুহূর্তে 'মিডল ম্যান' হিসাবে দাঁড় করাত শীতল। চড়া সুদের হাত থেকে বাঁচতে সেই মধ্যস্থতাকারী নিজেকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতেন। ফলে শেষ মুহূর্তে রাজি করানোটা সহজ হয়ে যেত। এর জন্য সেই 'মিডল ম্যান' পেতেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এই কারণেই এতদিন কেউ চাপে পড়ে কিডনি বিক্রির অভিযোগ সামনে আনেননি। আর ততদিনে পেল্লাই দোতলা বাড়ি, লক্ষ লক্ষ টাকার সোনার গয়না সমেত স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে কোটি টাকা বেশি সম্পত্তির মালিক হয়ে গিয়েছে শীতল! আর সর্বহারা হয়েছেন অশোকনগরের কল্যাণগড় গ্রামের মানুষজন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অশোকনগরের কিডনি পাচার চক্রে জড়িত 'সুদখোর' শীতলের প্রাসাদোপম বাড়ি!
  • ৩৩ লক্ষ টাকার সোনার চেন, আরও অন্যান্য গয়না মিলিয়ে কোটি টাকার সম্পত্তি তার।
  • তদন্তে এসব তথ্য হাতে পেয়ে চোখ কপালে দুঁদে গোয়েন্দাদেরও।
Advertisement