shono
Advertisement
Gangasagar

বাংলাদেশে শান্তি প্রার্থনায় কীর্তন গঙ্গাসাগরে, ইউনুসের মতি ফেরাতে হল লঙ্কাযজ্ঞ!

বাংলাদেশ ফেরত কাকদ্বীপ, নামখানার মৎস্যজীবীদের উপর অত্যাচারের করুণ কাহিনি শুনে আরও বেশি করে প্রার্থনা শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 01:15 PM Jan 07, 2025Updated: 01:36 PM Jan 07, 2025

গৌতম ব্রহ্ম, সাগর: বাংলাদেশের জন্যে মন কাঁদছে গঙ্গাসাগরের। ইউনুস বাহিনীর মদতে অত্যাচারিত সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষার জন্য প্রার্থনার আয়োজন করলেন পুণ্যার্থীরা। কোথাও শ্রীখোল বাজিয়ে নাম সংকীর্তন, কোথাও আবার পদ্মাপাড়ের সনাতনীদের মনের জোর বৃদ্ধিতে পুরোহিতরা সমবেতভাবে পুনশ্চয় করেছেন মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। কোথাও আবার ইউনুস বাহিনীর সুমতি ফেরার প্রার্থনায় হয়েছে লঙ্কাযজ্ঞ। ১১১ কেজি শুকনো লঙ্কা পুড়িয়ে মহাযজ্ঞ! মঙ্গলবার সকালে এভাবেই বাংলাদেশের জন্য প্রার্থনায় স্পন্দিত গঙ্গাসাগর সৈকত। সবার একটাই বক্তব্য, হিন্দুদের উপর অত্যাচারের খবর তাঁরা পাচ্ছিলেন। কিন্তু সোমবার যেভাবে বাংলাদেশে আটকে পড়া বাংলার মৎস্যজীবীদের হাত-পা বেঁধে অত্যাচারের ঘটনা সামনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, তা উদ্বেগ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

গত কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশে হিন্দুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে বাংলাও। হয়েছে মিটিং-মিছিলও। কিন্তু সাধারণ মানুষের মনকেমনের ছবিটা সামনে আসেনি সেভাবে। সোমবার বাংলাদেশে আটকে থাকা কাকদ্বীপ, নামখানার মৎস্যজীবীরা ফিরে আসার পর সেই ছবিটা স্পষ্ট হল। তাঁদের কারও কারও শরীরে আঘাতের চিহ্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ জানান, বাংলাদেশের কারাগারে তাঁদের মারধর করা হয়েছে। আর তারপর বাংলাদেশে শান্তি ফেরানোর জন্য আরও বেশি করে প্রার্থনা শুরু হয়। ওপার বাংলার হিন্দুদের ভালো থাকার আর্তিতে এপার বাংলাতেও চলছে, কোথাও যজ্ঞ, কোথাও চলছে বাংলাদেশে থাকা হিন্দুদের শান্তি কামনায় নাম সংকীর্তন, কোথাও আবার হয়েছে মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রজপ।! আর যাঁরা করছেন, তাঁরা কেউ সাধারণ ধর্মপ্রিয় ব্রাহ্মণ, আবার একেবারে কেউ সাধারণ মানুষ।

গঙ্গাসাগর মেলায় বাংলাদেশের জন্য প্রার্থনা, নামসংকীর্তন। নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা। ১ নম্বর বিচের বেলাভূমিতে দেখা পুরোহিত নাড়ুগোপাল পণ্ডা ও তন্ময় মাইতির সঙ্গে। তাঁরাই জানালেন, ইউনুস বাহিনীর সুমতি ফিরুক। বাংলাদেশ আগের মতো শান্ত হোক। এই প্রার্থনায় রাতভর লঙ্কা পুড়িয়ে যজ্ঞ হয়েছে। সকালে পুজো পাঠের ফাঁকেই গায়ত্রী জপ করে হয় সূর্যপ্রণাম। তারপর সমবেতভাবে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের পুনশ্চরণ। এদিন তাঁদের সঙ্গে সাংবাদিক কথা বলতে গেলে, সাংবাদিকদের প্রথমে এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা। এর পেছনে কারণ অবশ্য একটা আছে, যেভাবে সাম্প্রতিক অতীতে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর অত্যাচারকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি ময়দানে নেমে পড়েছেন তার অংশীদার হতে চাননি তাঁরা। নাম গোপনের আশ্বাস দেওয়া হলে তাঁরা জানান, ওপার বাংলায় ভালো নেই হিন্দুরা। এপার বাংলায় বসে তা মেনে নিতে পারছেন না। ভগীরথ মা গঙ্গাকে মর্ত্যে আনতে এই গঙ্গাসাগরকে বেছে নিয়েছিলেন। যে মা গঙ্গা গোটা বিশ্বকে তাঁর পবিত্র ধারা দিয়ে শান্তি স্থাপন করেন। তিনিই তাঁদের রক্ষা করুন। তাঁদের বক্তব্য, "দেখুন আমরা সাধারণ পুরোহিত। গঙ্গাসাগরে যারা আসেন তাদের নিকট আত্মীয়ের আত্মার উদ্ধারের জন্য তর্পণ করি। কখনো বা সংসারিক শান্তির জন্য মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করি। এর চেয়ে বেশি কিছু করার ক্ষমতা নেই।"

সৈকতে ঘুরতে ঘুরতেই দেখা হয়ে গেল এক হরগৌরাঙ্গ সম্প্রদায়ের সঙ্গে। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে। সজল কুমার পন্ডা, পূর্ণেন্দু মাইতি ও সনৎ মিশ্র। স্নান সেরে বেলাভূমিতে বসে খোল-করতাল বাজিয়ে উচ্চস্বরে হরিনাম করছিলেন। তাঁরা বললেন, বাংলাদেশে থাকা হিন্দুদের মঙ্গল কামনায় এই নাম সংকীর্তন করছেন তারা। ওই দলের এক সদস্য, সনৎ মিশ্র বলছিলেন বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের কথা। বললেন, ''জানেন তো ওই মানুষগুলোর জন্য মন কাঁদছে আমাদের।''

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাংলাদেশে শান্তি ফেরাতে গঙ্গাসাগরে মহাযজ্ঞ।
  • ইউনুসের মতি ফেরাতে নামসংকীর্তন, লঙ্কাযজ্ঞ সাধারণ মানুষ, পুরোহিতদের।
  • কাকদ্বীপ, নামখানার মৎস্যজীবীদের উপর অত্যাচারের করুণ কাহিনি শুনে প্রার্থনার আয়োজন।
Advertisement