সংগ্রাম সিংহ রায়, শিলিগুড়ি: জমি মাফিয়ার গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার শিলিগুড়ি। চললও গুলিও। তবে পুলিশি তৎপরতায় গ্রেপ্তার হয়েছে শিলিগুড়ির কুখ্যাত জমি মাফিয়া জয়প্রকাশ ওরফে হিম্মত চৌহান। অভিযোগ, শনিবার হিম্মতকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে তার সাঙ্গপাঙ্গদের বাধার মুখে পড়ে প্রধাননগর থানার পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তৎপর হয়েছে পুলিশ, এমনটাই খবর। এদিকে হিম্মতের গ্রেপ্তারিতে পুলিশকে বাধা দেয় এলাকার তৃণমূলের কর্মীরাও। ঘটনাস্থলে কয়েক রাউন্ড গুলিও চলে। এদিকে দলীয় নেতার গ্রেপ্তারির ঘটনায় প্রায় শতাধিক তৃণমূল কর্মী প্রধাননগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ঘটনার খবর করতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন সাংবাদিকরাও। সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি ছবি তুলতে গেলে ধাক্কাও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
[ইস্কনের সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে নাবালিকা অপহরণের অভিযোগ, তুলকালাম শিলিগুড়িতে]
জানা গিয়েছে, ভুয়ো দলিল বানিয়ে জমি কেড়ে নেওয়া থেকে শুরু করে ভয় দেখিয়ে জমি দখল। একই জমি একাধিক ব্যক্তিকে বিক্রি করা, তোলা আদায়, খুন খারাপি সহ বহুবিধ অভিযোগ রয়েছে হিম্মত চৌহানের বিরুদ্ধে। প্রধাননগরের বাসিন্দারা হিম্মত ও তার অনুগামীদের অত্যাচারের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকেন সর্বদা। বারবার পুলিশে অভিযোগ করেও কোনও ফল হয়নি। শিলিগুড়ি পুরনিগমের গত নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে নির্ধারিত প্রার্থীকে আচমকাই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে হিম্মতকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায় তৃণমূল। খুব অল্প মার্জিনে সিপিএমের মুকুল সেনগুপ্তের কাছে হেরেও যায় সে। এই ঘটনায় সামান্য হলেও স্বস্তির শ্বাস ফেলেছিলেন এলাকাবাসী। তবে হিম্মতের গুন্ডামিতে ইতি পড়েনি। শহরের বুকে একটুকরো জমি থাকলেও আতঙ্কেই দিন কাটাতেন বাসিন্দারা।
[সদ্যোজাতের গর্ভে আরও একটি সন্তান, বিরল ঘটনার সাক্ষী কল্যাণী জেএনএম হাসপাতাল]
বলা বাহুল্য, হিম্মতে চৌহানের অত্যাচারের খবর পৌঁছেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি পুলিশকে ডেকে সাফ নির্দেশ দিয়েছিলেন, বেআইনিভাবে জমির দখল বা বিক্রির ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশও দেন। সেইমতো আসরে নামেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনা। জমি সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখে শুরু হয় ধরপাকড়। গত ১৫ দিনে প্রায় ৪০ জন অভিযুক্ত জমি মাফিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারির পরেও বিরোধীরা দাবি তোলে, এখনও পর্যন্ত জমি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত চুনোপুঁটিদেরই ধরেছে পুলিশ। রাঘববোয়ালরা বাইরেই ঘুরে বেড়াছে। এরপরেই শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হয় কুখ্যাত জমি মাফিয়া হিম্মত চৌহান। তার গ্রেপ্তারিতে অনুগামীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে থানা ঘেরাও করে। সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হন। কয়েক রাউন্ড গুলিও চলে। যদিও গুলি চলার কথা মানতে চাননি কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। ধৃত জমি মাফিয়াকে এদিনই আদালতে তোলা হবে বলে খবর।
The post মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পুলিশের জালে কুখ্যাত জমি মাফিয়া, থানায় তাণ্ডব অনুগামীদের appeared first on Sangbad Pratidin.
