স্টাফ রিপোর্টার, হাওড়া: প্রায় চোদ্দো বছর পর হাওড়ার (Howrah) রামকৃষ্ণপুর ঘাটে একদল ভবঘুরের মধ্যে বাবাকে ফিরে পেলেন ছেলে। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে বাড়ি থেকে কাজে যাচ্ছি বলে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি জলপাইগুড়ির মালবাজারের চা বাগানের শ্রমিক চম্পা ওরাওঁ। এতদিনে বাবার খোঁজ পেলেন কিরণ ওরাওঁ। হাওড়ায় রামকৃষ্ণপুর ঘাটে হয় বাবা ও ছেলের সাক্ষাৎ। বাঁধ মানল না চোখের জল।
বাবাকে খুঁজে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল কিরণ ও তাঁর পরিবার। এতবছর বাদে চম্পা ওরাওঁয়ের খোঁজ পেয়ে আপ্লুত প্রত্যেকে। বুধবার দুপুরে হাওড়ায় রামকৃষ্ণপুর ঘাটে এসে পৌঁছান কিরণ ওরাওঁ। তাঁর কথায়, “আমরা ভেবেছিলাম, বাবা হয়তো বেঁচে নেই। বুঝতে পারছি না এখানে কী করে এলেন।” মালবাজারে কিরণের স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে। সেই পরিবারেই বাবাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এবার যেন তাঁর পরিবার পূর্ণ হল।
[আরও পড়ুন: শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য]
জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষবার বাড়িতে ফোন করেছিলেন চম্পা ওরাওঁ। জানিয়েছিলেন, তিনি পাঞ্জাবে রয়েছেন। সেখানে একটি চাষের জমিতে ট্র্যাক্টর চালানোর কাজ করছেন। তারপর থেকেই বাবার আর কোনও হদিশ পাননি কিরণ। বহু চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি।
কয়েকদিন আগে হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর ঘাটে ওই ব্যক্তিকে অন্যান্য ভবঘুরেদের সঙ্গে দেখতে পান স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। ওই সংস্থার প্রতিনিধি বি এন পাঠক জানান, কয়েকদিন আগে তিনি লক্ষ্য করেন, ভবঘুরেদের মধ্যে চম্পা ওরাওঁ নামে ওই বৃদ্ধ খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরপর ওই সংস্থার পক্ষ থেকে সৌরভ দাস নামে স্থানীয় এক চিকিৎসকের মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা করা হয়। ওই চিকিৎসক জানান, ওই ব্যক্তি তখন নিজের নাম বলতে না পারলেও শুধু মালবাজারে বাড়ি বলে জানাতে পারেন। একই সঙ্গে তাঁর ছেলের নাম বলতে পারেন। চা-বাগানের এক পরিচিতর মাধ্যমে কিরণ রাওয়ের খোঁজ মেলে। তারপরই বুধবার বাবা-ছেলের সাক্ষাৎ হয়।