স্টাফ রিপোর্টার: মাছ-মাংস না থাকলেও ভাতের পাতে একটু ডিম (Egg) হলেই চলে যায়। কিন্তু সেই ডিমও যখন মহার্ঘ্য, তখন উপায়? ইতিমধ্যেই কোথাও জোড়া ডিম ১৩, কোথাও ১৪ টাকা। ট্রে-তে একসঙ্গে ৩০টা কিনলেও দামের খুব একটা হেরফের হচ্ছে না। এদিকে দাম বেড়েছে পিঁয়াজেরও। খুচরো বাজারে দাম ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, নাসিক থেকে জোগান কম থাকার কারণেই দাম বেড়েছে পিঁয়াজের (Onion)। ২৭-৩০ টাকায় পাইকারি বাজারে বিক্রি হলেও খুচরো বাজারে তা বিকোচ্ছে ৫০ টাকায়। গত এক সপ্তাহে তার দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ টাকা।
মুরগির মাংসের দাম কয়েকদিন আগে ছিল ২০০ টাকা কেজি। ডিমের তুলনায় দাম ঠিকই আছে। কিন্তু এক ট্রে ডিম মাসখানেক আগেও যেখানে দাম ছিল ১৪০-১৫০ টাকা, সেই দামই ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে বাজারে। দোকানদাররা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণেই খুচরো বাজারে বেড়েছে। গত দেড় মাসে এক জোড়া ডিমের দাম গড়ে তিন টাকা করে বেড়েছে। পোলট্রি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের দাবি, মুরগির খাবারের দাম গত দু’বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে ডিসেম্বরে অশান্তির আশঙ্কা, পুলিশ প্রশাসনকে ফের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী]
স্বাভাবিকভাবেই তাই ডিম এবং মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে অন্ধ্র থেকে জোগান কমে যাওয়ায় দামটা বাড়ল। সেখানে ভাইরাসের (Virus) কারণে প্রচুর মুরগি মারা যাচ্ছে। যেখানে এক লক্ষ ডিম আসত সেখানে এখন আসছে হাজার চল্লিশেক মতো। আর ঠান্ডা-গরমের এই আবহাওয়ায় রাজ্যেও অনেক মুরগি মারা যাচ্ছে। এই সব কারণেই ডিমের দাম বাড়ছে। চলতি মাসে দাম কমার তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। উলটে তা বাড়তে পারে। কারণ ডিসেম্বর মাসে কেকের চাহিদা বাড়ে। স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে ডিমের চাহিদাও। সেই জোগান দিতে গিয়েই বেড়ে যায় দাম। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ডিমের দাম আট টাকা পিস হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
পোলট্রি (Poultry) ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুরগির খাবার ভাঙা চালের দাম করোনা কালের আগে ছিল ১২ টাকা, আর এখন ২৪ টাকা প্রতি কেজি। অর্থাৎ দ্বিগুণ। ভুট্টা ১৩ টাকার বদলে দাম হয়েছে ১৯ টাকা। সেই সঙ্গে মুরগি, ডিম আনা-নেওয়ার খরচও বেড়েছে। সব মিলিয়ে দাম না বাড়ালে চাষিরা সমস্যায় পড়বেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, শ্রাবণ মাসে ডিমের চাহিদা কিছুটা কমেছিল। তাই দামও কমেছিল। কিন্তু চাহিদা বাড়লে দাম তো বাড়বেই। গরিবের শরীরে প্রোটিনের জোগানের মূল উপকরণ হচ্ছে ডিম। কারণ তাঁদের পক্ষে রোজ মাছ খাওয়া সম্ভব নয়। সেই ডিমের দাম বেড়ে যাওয়াতে সমস্যায় পড়েছেন নিম্নবিত্তরা।
[আরও পড়ুন: যৌনাঙ্গে ঝাঁটার হাতল ঢুকিয়ে ধর্ষণ করে খুন! হরিয়ানার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য]
আবার বড়দিন উপলক্ষে প্রচুর কেক (Cake) তৈরি হয়। যে কেক বানানোর জন্য নভেম্বর থেকেই ডিমের চাহিদা বাড়ে। তাই প্রতি বছরই এই সময়টায় দামও প্রায় ৫০ পয়সা বাড়ে। একেকটি ডিম উৎপাদনে খরচ পড়ে চার টাকা মতো। ওয়েস্টবেঙ্গল পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য দীপ দে বলেন, “অন্ধ্রে প্রচুর মুরগি মারা যাচ্ছে। ফলে ওখান থেকে ডিম আসা অনেকটা কমেছে। তাছাড়া ঠান্ডা পড়ায় এখানেও ভাইরাস এসেছে। মুরগি মারা যাচ্ছে। অথচ কেক তৈরির কারণে এই সময় ডিমের বিপুল চাহিদা। তার প্রভাবই পড়ছে খোলা মার্কেটে।” এদিকে পিঁয়াজের দামবৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য সরকারের কৃষি বিষয়ক টাস্ক ফোর্সের (Task Force) সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘এই সময়টা পিঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়ে। কারণ, জোগান কমে।’’