শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: বাবার মৃত্যুর পর আচমকাই রাজনীতির ছাতার নিচে এসেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)। কিন্তু তৃণমূল-বিজেপি কোনও দলের সহযোদ্ধাদের কাছের হতে পারেননি। দলের ঊর্ধ্বে গিয়ে নিজের মতো করে যাবতীয় কাজ পরিচালনার চেষ্টা করেছেন। যার জেরে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। নাম জড়িয়েছে দুর্নীতিতেও। গত আড়াই ২ বছরে ঝড়ের গতিতে বদলে গিয়েছিল কৃষ্ণ কল্যাণীর জীবন।
কল্যাণী পরিবার বহুদিন ধরেই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কৃষ্ণ কল্যাণীর বাবা দীনদয়াল কল্যাণীর সংস্থার নাম কল্যাণী সলভেক্স। বাবার ব্যবসাতেই যুক্ত ছিলেন কৃষ্ণ ও তাঁর ভাই নারায়ণ। তবে শুধু ব্যবসা নয়। রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন দীনদয়াল কল্যাণী। প্রথমে সিপিএম, পরবর্তীতে তৃণমূল করেছেন। ছিলেন কাউন্সিলর। এলাকার যথেষ্ট দাপট ছিল তাঁর। কিন্তু কৃষ্ণ কল্যাণীর রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগ ছিল না। ২০২০ সালে দীনদয়াল কল্যাণীর মৃত্যুর পরই বদলাতে শুরু করে কৃষ্ণ কল্যাণীর জীবন। ধীরে ধীরে জনসেবায় যুক্ত হন তিনি। বিভিন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ান। পরবর্তীতে যোগ দেন বিজেপিতে। শুরু থেকেই বিধানসভায় প্রার্থী হওয়া লক্ষ্য ছিল তাঁর। তবে ভোটের আগেই একশো দিনের কাজের চারাগাছ ও স্কুলড্রেস দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে পড়েন কৃষ্ণ কল্যাণীর। যদিও তাতেও প্রার্থী হওয়ায় আটকায়নি।
[আরও পড়ুন: নবজোয়ার কর্মসূচিতে এবার তৃণমূল সুপ্রিমোও, মালদহে একই মঞ্চে থাকবেন মমতা-অভিষেক]
বিজেপির একাংশ চায়নি আনকোরা কৃষ্ণ কল্যাণী প্রার্থী হোক। কিন্তু তা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত বিজেপি তাঁর উপরই ভরসা করে। ভোটে লড়ে জিতেও যান। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ বাড়তে থাকে। আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তিনি বিজেপিতে থাকাকালীন দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন জেলার তৃণমূল নেতা কানাইলাল আগরওয়াল। জেলাশাসকের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে শিবির বদল করেন কৃষ্ণ কল্যাণী। কানাইলাল আগরওয়ালের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর আর সেই অভিযোগ নিয়ে বিশেষ নাড়াচাড়া হয়নি। তবে তৃণমূলে যোগ দিলেও দলের কারও কাছের হতে পারেননি তিনি। কার্যত দাপট দেখাতেন এলাকায়। ফলে দলের অন্দরেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতেই আয়কর হানা কৃষ্ণ কল্যাণীর বাড়ি, শোরুম, অফিস-সহ মোট ৭ জায়গায়। মালদহের এক তৃণমূল নেতার বাড়িতেও হানা দিয়েছে আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা।