অর্ণব দাস, বারাসত: জাতীয় সড়ক সংযোগকারী আস্ত একটি রাস্তা দখল করে দুদিক ঘিরে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। একাধিকবার প্রশাসনের তরফে ক্লাবকে নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কাজ না হয়নি বলেই অভিযোগ। এর পর রবিবার সকালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসীরা। বিকেলেই বুলডোজার চালিয়ে সরকারি রাস্তা দখলমুক্ত করল বারাসত পুরসভা।
বারাসতের প্রাণকেন্দ্র কলোনিমোড় সংলগ্ন ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই রয়েছে সুভাষ ময়দান। মাঠটির দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাবকে। মাঠের ঠিক উত্তর দিকে ২২৪৯ দাগ নম্বরে রয়েছে জাতীয় সড়ক সংযোগকারী ১২-১৪ ফুট চওড়া একটি রাস্তা। জানা গিয়েছে, সেটি পুরসভার মৌজা ম্যাপেও রেকর্ডভুক্ত। সুভাষ ময়দান পাঁচিল দিয়ে ঘেরার আগে এই রাস্তা দিয়ে ছিল নবপল্লির বাসিন্দাদের নিত্য যাতায়াত।
অভিযোগ, মাঠের চারপাশ ঘিরে ফেলার পর রাতারাতি রাস্তার দুদিকে দুটি লোহার গেট বসিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী রাস্তার জমিতেই খেলোয়াড়দের বসার জন্য কংক্রিটের নির্মাণও করে দেয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে এনিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন স্থানীয়রা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে তৎপর হয় বারাসত পুরসভা।
এনিয়ে ক্লাবের সঙ্গে পুরসভার বৈঠকের পর, ২২ নভেম্বর মহকুমা শাসকের দপ্তরেও বৈঠক হয়। সেখানে রাস্তাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন মহকুমা শাসক। কিন্তু অভিযোগ, নির্দেশকে আমল দেয়নি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এর পর রবিবার সকালে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা গেটের তালা ভেঙে রাস্তা ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিকেলে পুরসভার তরফে জেসিবি দিয়ে সরকারি রাস্তা দখলমুক্ত করা হয়।
এ নিয়ে বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (পূর্ত) অরুণ ভৌমিক বলেন, "বাসিন্দাদের দাবি মেনে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।" যদিও ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা সৌরেন দে জানিয়েছেন, "কিছু বলতে আগ্রহী নই। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আদালতের নির্দেশ মতো যা করার আগামী দিনে করব।"
তবে, পুরসভার পদক্ষেপে খুশি বিক্ষোভকারী স্থানীয়রা। বাসিন্দা সুমিত্রা রায় জানান, "এই রাস্তা সাধারণ মানুষের। আমরা রাস্তার জন্য পথে নেমেছিলাম। অবশেষে প্রশাসন আমাদের পাশে দাঁড়ানোয় আগের অবস্থা ফিরে পেলাম।" বিক্ষোভকারী স্বপন মজুমদার, জয়ন্ত চক্রবর্তীরা বলেন, "জায়গাটি রাস্তা ছিল। কিন্তু ক্লাব গায়ের জোরে দখল করে রেখেছিল। এদিন সকালে আমরা বিক্ষোভ দেখানোর পর বিকালে প্রশাসন সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা খুশি।"