কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: অসুস্থ হয়ে সকালেই ভরতি হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। করোনা সন্দেহে তাঁর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে বেলেঘাটার নাইসেডে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। কিন্তু সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগেই হাসপাতালে মৃত্যু হল সৌদি আরব ফেরত যুবক জিনারুল হকের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রক্তে উচ্চমাত্রায় শর্করা, শ্বাসকষ্ট ছিল তাঁর। কিন্তু COVID-19 ভাইরাস শরীরে বাসা বেঁধেছিল কি না, তা নিয়ে এখনও বিস্তর সংশয়। যদি তিনি করোনা পজিটিভ হন, তাহলে দেশের মধ্যে প্রথম করোনার ভাইরাসের বলি হবে ইনিই।
শনিবারই সৌদি আরব থেকে দমদম বিমানবন্দরে নেমেছিলেন মুর্শিদাবাদের যুবক জিনারুল হক। তিনি আরবে শ্রমিকের কাজ করতেন বলে খবর। দমদম থেকে ট্রেনে বাড়ি ফেরার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন জিনারুল। কোনওক্রমে রাতে বাড়িতে পৌঁছন তিনি। এরপর আজ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকরা সমস্ত শুনে তাঁকে করোনার চিকিৎসার জন্য তৈরি বিশেষ ওয়ার্ডে ভরতি করে নেন। জিনারুলের শরীরে নোভেল করোনার জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে, এই সন্দেহে একাধিক শারীরিক পরীক্ষা হয়। রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় বেলেঘাটায়।
[আরও পডুন: অযোধ্যা পাহাড়ে ছুটছে ‘রানার’ পুতনা, ৩২ বছর ধরে ডাকসেবকের কাজ করছেন মহিলা]
মেডিক্যাল কলেজের সহ-অধ্যক্ষ ডাঃ দেবদাস সাহা বলেন, “ওই যুবক কে করোনা সন্দেহে ভরতি করা হয়েছে। যেহেতু তিনি বিদেশ থেকে এসেছেন, তাই তাঁর শারীরিক পরীক্ষা দরকার। সেসব চলছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। আমরা সবরকমভাবে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুত।” কিন্তু রবিবার বিকেলের দিকেই খবর মেলে, মৃত্যু হয়েছে জিনারুলের। তাঁর রক্তে উচ্চমাত্রায় শর্করা ছিল, শ্বাসকষ্টও ছিল। আর COVID-19 পরীক্ষার রিপোর্ট এসে না পৌঁছনোয় চিকিৎসকরা নিশ্চিত নন যে তিনি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ছিলেন কি না।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সাধারণত নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানোর পর ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় রিপোর্ট পাওয়ার জন্য। ফলে হয়ত জিনারুলের রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট মিলবে সোমবার বিকেল বা মঙ্গলবার। তবে তার আগেই তো সব শেষ। যদি রিপোর্টে দেখা যায়, তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন, তাহলে দেশে প্রথম করোনার বলি হবেন মুর্শিদাবাদের জিনারুল হকই। তাই পরিবারের ছেলের অকস্মাৎ মৃত্যুতে শোকের পাশাপাশি এই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।
[আরও পডুন: কয়েক কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে বাংলাদেশিকে পালাতে ‘সাহায্য’! ক্লোজ ইংরেজবাজার থানার আইসি]
জিনারুলের মতো সৌদি আরব ফেরত আরও এক ব্যক্তি ভরতি হয়েছেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। তাঁর শরীরেও করোনা ভাইরাস বাসা বেঁধেছে কি না, তা বুঝতে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে শুরু হয়েছে চিকিৎসা।
এদিকে, করোনা দমনে আরও শক্ত হাতে নামছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি রাখতে বলা হয়েছে বলে খবর। সেইমতো বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ড তৈরি হচ্ছে করোনার চিকিৎসার জন্য।
The post করোনা সন্দেহে সকালে হাসপাতালে ভরতি, বিকেলেই মৃত্যু সৌদি আরব ফেরত যুবকের appeared first on Sangbad Pratidin.
