shono
Advertisement

ইংরাজি ভীতির কারণে ঋষিকের আত্মহত্যা অবিশ্বাস্য! বলছে পরিবার

বিদেশি ভাষাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রবণতা মারাত্মক, বলছেন মনোবিদদের একাংশের৷ The post ইংরাজি ভীতির কারণে ঋষিকের আত্মহত্যা অবিশ্বাস্য! বলছে পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:45 PM Aug 03, 2019Updated: 02:45 PM Aug 03, 2019

নব্যেন্দু হাজরা, সিঙ্গুর: বিদেশি ভাষা আপন হল না, নিত্যদিনের সংযোগের মাধ্যম হিসেবে আত্মীকৃত হল না ভিনদেশি শব্দগুলো৷ শুধুমাত্র এই অভাব পূরণ করতেই কি প্রাণ বিসর্জন দিল সেন্ট জেভিয়ার্সের মেধাবী ছাত্র? নাঃ, একথা বিশ্বাস করতে পারছেন না পরিবারের কেউ৷ কলকাতার নামী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ঋষিক কোলের সিঙ্গুরের বাড়ি গিয়ে চাপ চাপ একরাশ শোকের মাঝে সেই অবিশ্বাসের ছবিটাই ধরা পড়ল৷

Advertisement

[ আরও পড়ুন: ছাত্রদের চুলের ছাঁট দেখে চক্ষু চড়কগাছ, নাপিতদের চিঠি প্রধান শিক্ষকের]

দোলতলা লেনের অপূর্বপাড়ায় ঋষিকের বাড়িতে গিয়ে যখন পৌঁছানো হল, তখন বাড়িটা লোকে লোকারণ্য৷ আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী থেকে স্কুলের শিক্ষক, বন্ধু সকলেই হাজির তাঁদের প্রিয় ছেলেটির বাড়িতে৷ যে ছেলে মাত্র কয়েকঘণ্টা আগেও ছিল৷ শুক্রবার রাত থেকে ‘নেই’ হয়ে গিয়েছে৷ সিঙ্গুর মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বরাবরের মেধাবী ছাত্র ঋষিক৷ শিক্ষকরা তাকে ভালবাসতেন, স্নেহ করতেন৷ চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফল করেছিল৷ মার্কশিটে অঙ্ক, ফিজিক্সে দারুণ নম্বরের পাশাপাশি জ্বলজ্বল করছিল ইংরাজির নম্বর – ৮৪৷ খুব ইচ্ছে ছিল তার, সেন্ট জেভিয়ার্সের মতো কলেজে পড়বে৷ নিজের যোগ্যতাতেই সেই সুযোগ পেয়েছিল ঋষিক৷ ফিজিক্স অনার্স নিয়ে ভরতি হয় সে৷ সবে একসপ্তাহ হল ক্লাস শুরু হয়েছে৷ গত শনিবার থেকেই সে ক্লাসে গিয়েছিল৷

সব ঠিকঠাকই চলছিল৷ কিন্তু সেন্ট জেভিয়ার্সের মতো প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতিই আলাদা৷ সেখানে হরবখত ইংরাজিতে কথা বলার চল৷ ক্লাসের বাইরে সহপাঠীদের সঙ্গে গল্পগুজবের ক্ষেত্রেও মাতৃভাষা নয়, ২০০ বছরের ঔপনিবেশিকতার হ্যাংওভারই প্রকাশ্যে চলে আসে৷ আর সেই পরিবেশেই সম্ভবত মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছিল ঋষিকের৷ কিন্তু সেই অসুবিধা যে এতটা চরমে পৌঁছে গিয়েছে, যার জেরে তাকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হল, তা মানতে চাইছেন না পরিবারের কেউ৷ বাবা,মা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই৷ এক আত্মীয় জানাচ্ছেন, ঋষিক ছোটবেলা থেকে একটু লাজুক, অন্তর্মুখী৷ নিজের জগতে ডুবে থাকতেই বেশি ভালবাসত৷ এই সময় দাঁড়িয়েও সে মোবাইল ফোন ব্যবহার করত না৷ তার দিদিও বেশ মেধাবী, ধানবাদে পিএইচডি করছে এখন৷

[ আরও পড়ুন: ‘দরকার হলেই ফোন করুন’, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির জোর প্রচার সাংসদ মিমির]

যে উচ্চমাধ্যমিকে ইংরাজিতে ৮৪ পেয়েছে, সে যে ইংরাজি ভীতির কারণে নিজেকে শেষ করে দিয়েছে, একথা অবিশ্বাস্য ঠেকছে ঋষিকের স্কুলের শিক্ষকদের কাছেও৷ প্রিয় ছাত্রের এই পরিণতিতে শোক তো বটেই, বিস্ময়ও ঘিরে ধরেছে তাঁদের৷ একটা প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন সকলে৷ কেন এমনটা করল ঋষিক? এই আবহে এমন প্রশ্নও উঠছে, তাহলে কি সাবলীলভাবে ইংরাজিতে কথা বলতে না পারায় কি কলেজের মধ্যে ব়্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছিল ঋষিক? সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে? এর কোনও সদুত্তর এখনও মিলছে না৷ তবে মনোবিদদের একাংশের মত, ইংরাজিতে কথা বলতে না পারার জন্য হীনমন্যতা বা চাপের মধ্যে থাকা ওই ছাত্রেরও মানসিক দুর্বলতা৷ ইংরাজিকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে ফেলার প্রবণতাটাই গন্ডগোলের৷ এই ভাবনা থেকে বেরতে না পারলে ঋষিকের মতো ঘটনা আটকানো সম্ভব না৷   

The post ইংরাজি ভীতির কারণে ঋষিকের আত্মহত্যা অবিশ্বাস্য! বলছে পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement