সুমিত বিশ্বাস: খুব সামান্য হলেও নোভেল করোনা ভাইরাস থাবা বসিয়েছে প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, ওড়িশায়। ফলে বাড়তি সতর্কতা এরাজ্যে। সংক্রমণ রুখতে আন্তঃরাজ্য সীমানা লাগোয়া ১৩ টি জেলার মোট ৭৮ টি নাকা পয়েন্টে শুরু হল নজরদারি। যার মধ্যে সর্বোচ্চ নাকা পয়েন্ট রয়েছে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পুরুলিয়ায়, মোট ১৪ টি। আজ থেকে সবক’টি পয়েন্টেই শুরু হল নজরদারি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের নির্দেশ মেনে এই কাজে নামল সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসন।
অবশ্য নজরদারির কাজে কিছুটা এগিয়ে ছিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রবিবার সকাল থেকে রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় কয়েকটি নাকা পয়েন্টে চেকিং শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর সোমবার থেকে জেলার ৩৮০ কিলোমিটার সীমানার মোট ১৪ টি পয়েন্টেই নজরদারি শুরু হয়ে গেল। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে, নথিপত্র দেখে তবেই প্রবেশের অনুমতি মিলছে। বিমান থেকে নেমে কেউ সরাসরি জেলায় এসেছেন কি না, তাও দেখা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: স্ত্রী-শ্বশুরের সাহায্যেই প্রেমিকাকে খুন! এগরায় ট্রলি ব্যাগে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় নয়া তথ্য]
নজরদারির কাজ কেমন চলছে, তা তীক্ষ্ণ নজরে রাখছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার, জেলা পুলিশ সুপার এস.সেলভামরুগন ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল কুমার দত্ত। এই জেলার ঝালদা পার হয়েই ঝাড়খণ্ড। রাঁচি বিমানবন্দর হয়ে পুরুলিয়ায় যাতায়াত চলে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্তের কথায়, “স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ রাজ্য জুড়ে করোনা রুখতে নজরদারি চালানোর জন্য আন্তঃ রাজ্য নাকা চেকিং পয়েন্টের তালিকা দিয়েছে। সেই তালিকা দেখে আমাদের কাজ শুরু হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কের প্রভাব কামারপুকুর মঠে, বন্ধ সন্ধে আরতি ও ভোগ বিতরণ]
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গ-অসম সীমানায় ৪টি, উত্তরবঙ্গ-বিহার-সিকিম সীমানায় ২৫টি নাকা পয়েন্ট রয়েছে। এছাড়া মধ্যবঙ্গের ৫ জেলার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের ৪৬টি এবং ওড়িশার তিনটি নাকা পয়েন্টে শুরু হয়েছে নজরদরি। এই পয়েন্টে নজরদারি চালাবেন বিডিও, ওসি এবং আইসিরাও। তবে নজরদারির কাজ কেমন চলছে, তা মনিটরিং করবেন ওই ১৩টি জেলার জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য় আধিকারিক। এই নজরদারির কাজ রাতের বেলাও চলবে। সেই কারণে আলোর ব্যবস্থা-সহ সবরকম পরিকাঠামোই গড়ে তুলছে রাজ্য।
এই জেলার একটা বড় অংশে আদিবাসীদের বাস। তাই জনসচেতনতার উদ্দেশে বাংলা, হিন্দি, ইংরাজি ভাষার পাশাপাশি সাঁওতালি ভাষা অলচিকি হরফেও লেখা পোস্টার বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে। জেলার একমাত্র বড় সদর হাসপাতাল দেবেন মাহাতো গর্ভনমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু হয়েছে। মোট কথা, রাজ্যবাসীকে করোনার ছোঁয়া থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রাখতে এবং অযথা আতঙ্ক ছড়ানো রুখতে সবরকমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ছবি: অমিত সিং দেও।
The post করোনা সতর্কতায় আন্তঃরাজ্য সীমানায় নজরদারি, ৭৮ টি পয়েন্টে শুরু নাকা চেকিং appeared first on Sangbad Pratidin.
