সুমন করাতি, হুগলি: বাড়ির পাশেই মাচা তৈরি করে মদের আসর বসাতেন প্রতিবেশী বাবা-ছেলে। বার বার প্রতিবাদ করা হলেও শোনেননি বলে অভিযোগ। এই আবহে তাঁদের মধ্যে জমি নিয়ে বচসা বাধে। প্রতিবাদ করতেই মহিলা ও তাঁর স্বামীকে মেরে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে। সোমবার হুগলির হরিপাল থানার ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়। মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত পরিবার। এক অভিযুক্তকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কয়েক বছর আগে হুগলির বাহিরখণ্ড পঞ্চায়েতের জিগড়া এলাকায় বাড়ি তৈরি করেন ছোটন দাস। বাড়িতে স্ত্রী ও ছোট বাচ্চাকে থাকেন তিনি। পাশেই থাকেন আব্দুল শহিদ ও তাঁর পরিবার। অভিযোগ, আব্দুল ও তাঁর ছেলে আব্দুল শামীম মাচা তৈরি করে নেশা করেন। প্রতিবাদ করলে শোনেননি। সঙ্গে গালিগালাজ করতেন বলেও অভিযোগ। এছাড়াও রাস্তা দিয়ে যাওয়া মহিলাদের কটূক্তি করতেন বলে দাবি কবিতার।
ঘটনার দিন কবিতাদের বাড়ির সামনের রাস্তা ভাঙতে থাকেন শামিমরা। ছোটন বাধা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তাঁর স্ত্রী বাধা দিতে গেলে বাঁশ দিয়ে মেরে তাঁর হাত ভেঙে দেওয়ার হয় বলে অভিযোগ। গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে সন্ধ্যায় হরিপাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কবিতা দাস ও তার স্বামী। আক্রান্ত মহিলার নাম কবিতা দাস বলেন, "ওরা মাচায় বসে নেশা করত। অনেকবার বারণ করেছি। কথা শোনেনি। বাড়ির সামনের জমি নিয়ে বচসা বাধে। হঠাৎই স্বামীকে মারধর করে। আমি বাধা দিতে গেলে বাঁশ দিয়ে মেরে হাত ভেঙে দেয়। আমাদের বহিরাগত বলছে। আমি গর্ভবতী থাকাকালীন, সেই অবস্থাও মারতে আসে। ওদের নেশায় বাধা দেওয়াতেই এই অবস্থা করল। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।" ছোটন বলেন, "দিনের পর দিন মাচায় বসে নেশা করে ওরা। বারণ করলে শোননি। মেয়েদের অশ্লীল ভাষা বলে টোন করে। আজ সকালে হঠাৎ আমার বাড়ির সামনের রাস্তা ভাঙতে থাকে। বাধা দিলে বলে এটা ওদের জমি। সেই সময় আমাদের ধরে মারে।"
যদিও আব্দুল শামীম ও তাঁর বাবা আব্দুল শহিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্তের বউমা রোশনারা বেগমের কথায়, "ওখানে মাচা করে বসে থাকা হত ঠিকই, কিন্তু মদ্যপান করা হত না। এটা মিথ্যা অভিযোগ। কাউকে সেইভাবে মারা হয়নি। ধাক্কাধাক্কির সময় কবিতার গায়ে লাগে। শ্বশুড়কে পুলিশ নিয়ে গিয়েছে।" হরিপাল থানার পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।