shono
Advertisement

অর্ধাহারে মৃতপ্রায় পরিবারের পাশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সন্ধেয় হবে লক্ষ্মীপুজো

সকাল থেকেই চলছে পুজোর প্রস্তুতি। The post অর্ধাহারে মৃতপ্রায় পরিবারের পাশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সন্ধেয় হবে লক্ষ্মীপুজো appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:29 PM Oct 13, 2019Updated: 02:29 PM Oct 13, 2019

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: গতকাল পর্যন্ত হাঁড়ি চড়ছিল না। আগাছায় ভরা জীর্ণ বাড়িতে কোনওক্রমে কাটত দিন। অলক্ষ্মীর প্রকোপ কাটাতে সেই ভট্টাচার্য পরিবারেই হতে চলেছে লক্ষ্মীর আগমন। একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পাশে এসে দাঁড়ানোয় অর্ধাহারের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলেছে আসানসোল পুরনিগমের মহিশীলা কলোনির বাসিন্দা দীপক ভট্টাচার্যের পরিবারের। শুধু তাই নয়, রবিবার ভট্টাচার্য বাড়িতেই পূজিতা হবে মা লক্ষ্মী। দায়িত্বে ‘আসানসোল ব্রাদারহুড’ নামক সংস্থা। ফের প্রমাণ মিলল যে, আসানসোল ভাতৃত্বের শহর। ভালোবাসার শহর।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পৌষ মেলা নিয়ে চূড়ান্ত দোটানায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, নজর গ্রিনবেঞ্চের রায়ে]

শনিবার থেকেই সংবাদমাধ্যমে একটা খবর ঘুরছিল। মহিশীলার এক পরিবার অনাহারে মৃতপ্রায়। “দু’বেলা উনুন জ্বলে না। ক’দিন খেতে পাইনি। চিকিৎসা করাতে পারছি না”, এভাবেই হাহাকার প্রকাশ করেছিলেন আসানসোল পুরনিগমের ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের মহিশীলা কলোনির বাসিন্দা দীপক ভট্টাচার্য। পেটের তাগিদে সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় ছিল গোটা পরিবার। এরকম একটা খবর দেখে দীপক ভট্টাচার্যর পরিবারের পাশে দাঁড়ান ফিডের চন্দ্রশেখর কুণ্ডু, ব্রাদারহুডের প্রশান্ত চক্রবর্তী, টিম মার্ক, দেবাশিস ঘটক, পিন্টু কর্মকার ও টিম ই-মোশনের অর্ক মণ্ডল-সহ অনেকেই।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে ওই পরিবারকে দেওয়া হয়েছে বাজার।

আসানসোলের মহিশীলা কলোনির বাসিন্দা দীপক ভট্টাচার্য। ৬৮ বছরের দীপক বাবুর সঙ্গে থাকেন তাঁর দিদি মিনতি এবং তাঁদের একমাত্র ভাইঝি অনিতা। দীপকবাবু জানিয়েছিলেন, তিনি বিয়ে করেননি। দিদি মিনতিরও বিয়ে হয়নি। আগে তাঁরা দাদা-বৌদির কাছেই থাকতেন। দীর্ঘদিন যাবৎ গৃহশিক্ষকতা করতেন। দাদা-বৌদি বেঁচে থাকতে কোনও কিছুর অভাব ছিল না। কিন্তু দাদা-বৌদির মৃত্যুর পরেই আকাশ ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবারের মাথায়। উপার্জন বন্ধ হয়েছে। সঞ্চিত অর্থ খরচ করতে করতে সঞ্চয়ের ভাঁড়ারেও টান পড়েছে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বেড়েছে দীপকবাবুর। অসুস্থতার কারণে ছাত্র পড়ানোও বন্ধ হয়েছে। একমাত্র ভাইঝি অনিতা মানসিক ভারসাম্যহীন। দিদি মিনতিদেবী চলাফেরা করতে পারেন না। চোখেও দেখতে পান না। ফলে তিন সদস্যের পরিবারের রোজগার শূন্য। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসেও কোনও সঞ্চিত অর্থ নেই। ভরসা বলতে পাড়ার লোক ও আত্মীয়রা। রেশন কার্ড থাকায় বরাদ্দ চাল মেলার কথা। কিন্তু রেশন দোকানে গিয়ে তা আনার ক্ষমতা নেই পরিবারের কারও। ফলে দু’মুঠো চাল ফুটিয়ে খাওয়ার পরিস্থিতি ছিল না। অগত্যা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছিলেন তাঁরা।

[আরও পড়ুন: চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু ব্যক্তির, সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে আটক ১]

স্থানীয় কাউন্সিলর শিবদাস চট্টোপাধ্যায় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে সরকারিভাবে সাহায্যের আগেই ছুটে আসেন সামাজিক সংগঠনগুলি। তাঁরা একমাসের রেশন, প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র ও ওষুধের ব্যবস্থা করে দেন। তাঁরা প্রত্যেকেই জানান স্থায়ীভাবে সরকারি পরিষেবা বার্ধক্য ভাতা, বেকারভাতা সহ অন্য পরিষেবাগুলি পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। মেয়রের কাছেও যাবেন। ব্রাদরহুডের প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, বাড়িটি আগাছায় ভরে ছিল। পরিস্কার করা হচ্ছে। আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শাঁখ বাজিয়ে মাকে ঘরে আনা হবে। সন্ধেয় লক্ষ্মী ঠাকুরের পুজো হবে। যাতে অভাব-অনটন দূরে সরিয়ে ফের পূর্ণ হয়ে ওঠে ভট্টাচার্য পরিবারের ভাঁড়ার।

The post অর্ধাহারে মৃতপ্রায় পরিবারের পাশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সন্ধেয় হবে লক্ষ্মীপুজো appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement