shono
Advertisement
Migratory birds

শীত পড়তেই ঘাটালের ঝিলে 'পিকনিক' পরিযায়ী পাখিদের, দেখতে ভিড় জমাচ্ছে পক্ষীপ্রেমীরা

আগের থেকে পাখির সংখ্যা কমেছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।
Published By: Subhankar PatraPosted: 02:45 PM Nov 22, 2024Updated: 04:04 PM Nov 22, 2024

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজির অতিথিরা। সেখানে এখন বরফঢাকা। ভারত, বিশেষত বঙ্গের শীতকাল তাদের বড়ই প্রিয়। তাই সাত সমুদ্র তেরো নদী পারের মতোই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লেজার কুইন্সলেনিং-এর মতো পাখিরা হাজির। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে পাশাপাশি রয়েছে এখানকার ডাহুক, পানকৌটি, বিভিন্ন প্রজাতির বকের। যা দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পর্যটকরা।

Advertisement

ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্কের ঝিলে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে যেমন আসছে সাইবেরিয়ান পাখি, তেমনই আসছে বিভিন্ন প্রজাতির বক, পানকৌড়ি, চেতক, ডাহুক, বুনো হাঁস, বন মোরগ, ঘুঘু প্রভৃতি। তবে সাইবেরিয়া থেকে আগত পরিযায়ী পাখি দেখতেই ভিড় জমছে বেশি। বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবেরিয়ান পরিযায়ী পাখি লেজার কুইন্সলেনিং বার্ড বলে পরিচিত।

সাধারণত অক্টোবর মাসের শেষ ও নভেম্বর মাসের শুরুতে এই পরিযায়ী পাখির ঢল নামে। শীতে পারদ নামলে ঘাটালে মূলত নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে আসতে শুরু করে এই প্রজাতির পাখি। আর তাদের আনাগোনা শুরু হতেই পক্ষী শিকারিরাও ওতপেতে বসে থাকে শিকারের জন‌্য। ঘাটালের বনকর্মী মলয় ঘোষ জানাচ্ছেন, "বন‌্যপ্রাণ আইনে পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। এই ধরণের পাখি আমাদের সবার অতিথি। তাকে বিরক্ত করাও উচিত নয়। বন দপ্তর থেকে যথোচিত ব‌্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।" পরিযায়ী পাখি নিয়ে সতর্ক ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতিও। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিকাশ কর বলেন, "অন‌্যান‌্য বছরের মতো এবছরও আমরা পরিযায়ী পাখি নিয়ে সতর্ক রয়েছি। হরিসিংহপুর জলাশয়ের কাছে আমরা একটি নোটিস বোর্ড দিয়েছি। পাশাপাশি, পাখিদের যাতে না কেউ বিরক্ত করতে পারে, তার জন‌্য মাইক-প্রচারও করা হবে। এই নিয়ে বন দপ্তরের সঙ্গে কথা বলাও শুরু করেছি।’’ বিকাশবাবু আরও জানান, জলাশয়ের পাশে মাইক বাজিয়ে পিকনিক করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোরে সূর্য ওঠার আগে এই পরিযায়ী পাখিগুলো জলাশয়ে আসে। আর সূর্য ডোবার আগেই চলে যায়। এদের মূলত খাবার বলতে ছোট ছোট মাছ, পোকা-মাকড়, গেঁড়ি, গুগলি ঝিনুক প্রভৃতি। লম্বা গলা বিশিষ্ট পাখিগুলো এক ডুবে গেঁড়ি, গুগলি বা মাছ ধরার দৃশ‌্য বেশ উপভোগ‌্য হয়ে ওঠে পর্যটকদের কাছে। বন দপ্তর জানিয়েছে, এই ধরনের পাখি প্রকৃতির ভারসাম‌্য রাখতেও সাহায‌্য করে।

এদিকে, হরিসিংহপুর পার্কের জলাশয়ে পরিযায়ী পাখির সংখ‌্যা কমছে বলে দাবি পর্যটকদের। প্রতিবছরই শীতের মরশুমে এই পরিযায়ী পাখি দেখতে হরিসিংহপুরে আসেন পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের বাসিন্দা অনিন্দ‌্য রায়। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক অনিন্দ‌্যবাবু পক্ষীপ্রেমী বলে পরিচিত।  তিনি বলেন, "আমি ১৫ বছর ধরে ঘাটালের এই জলাশয়ে পরিযায়ী পাখি দেখতে আসছি। আগে এই জলাশয়ে যে পরিমাণ পাখি আসত, এখন আর সেই পরিমাণ পাখি আসছে না। কারণ, আগের তুলনায় জলাশয়ের আশেপাশে অনেক উঁচু বাড়ি তৈরি হয়েছে। অদূরে একটি কারিগরি কলেজ তৈরি হয়েছে। এই ধরনের পাখিদের পছন্দ নির্জন জলাশয়। এখন আর এই জলাশয় ততটা নির্জন নয়। অদূর ভবিষ‌্যতে এই জলাশয়ে পাখি নাও আসতে পারে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজির অতিথিরা। সেখানে এখন বরফঢাকা। ভারত, বিশেষত বঙ্গের শীতকাল তাদের বড়ই প্রিয়।
  • তাই সাত সমুদ্র তেরো নদী পারের মতোই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লেজার কুইন্সলেনিং-এর মতো পাখিরা হাজির।
  • ঘাটালের হরিসিংহপুর পার্কের ঝিলে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে যেমন আসছে সাইবেরিয়ান পাখি
Advertisement