সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: গুরুং ক্যারিশ্মা এখনও ফিকে হয়নি দার্জিলিং পাহাড়ে৷ সেখানে ফিরে আসুন বিমল গুরুং। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র এবং দার্জিলিং বিধানসভার উপনির্বাচনে বিমলপন্থীদের সমর্থনে বিজেপির ধারাবাহিক জয়ের পর সেই দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। তবে গুরুংয়ের সবসময়ের দোসর হিসেবে রোশন গিরিকে তাঁরা একেবারেই চাইছেন না। সোশ্যাল সাইটের দেওয়ালে পোস্ট করা মন্তব্যগুলি দেখে রোশনকেই মোর্চা ভাগের মূল কারিগর হিসেবে দায়ী করছেন পাহাড়বাসী৷
[ আরও পড়ুন: অসম লড়াইয়েও জয়ী, উচ্চমাধ্যমিকে দারুণ ফল ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ছাত্রীর]
পাহাড়ে সোশ্যাল সাইটজুড়ে রোশন গিরিকে কোথাও ‘গদ্দার’, কোথাও ‘সুবিধাবাদী’ বলতেও পিছপা হননি নেটিজেনরা। সর্বত্রই তিনি ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। বিমল গুরুং, রোশন গিরি দু’জনেই আপাতত সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে৷ তাই এই প্রতিক্রিয়ায় তাঁদের কী মত, তা জানার উপায় নেই। তবে গুরুং পাহাড়ে ফিরে গেলে তাঁর নেতৃত্ব স্বীকার করতে কারও অসুবিধে নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। উলটোদিকে পাহাড়ে গণ্ডগোল আর সমস্ত ভুল বোঝাবুঝির দায় রোশনের উপর চাপাচ্ছেন দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াংয়ের বাসিন্দারা। পাহাড়বাসীর নাড়ি বুঝতে পেরে প্রকাশ্য সাংবাদিক বৈঠকেও প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির নবনির্বাচিত সাংসদ গুরুংকে ফেরানোর ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানালেও, রোশন গিরির ব্যাপারে মুখ খোলেননি। ফলে রোশন গিরির পাহাড়ে ফেরা আরও কঠিন হয়ে পড়ল বলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। গুরুং, রোশন গিরিকে নিয়ে সামগ্রিক বিষয়টি বিচারাধীন বলে এড়িয়ে গিয়েছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বর্তমান সভাপতি বিনয় তামাং।
২০১৭ সালের জুন মাস থেকে টানা ১০৫ দিন পাহাড়ে অশান্তি, ধারাবাহিক হিংসা-সহ একাধিক ঘটনায় অভিযুক্ত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এরপরই মোর্চার একটা অংশ রাজ্য সরকারকে সমর্থন দিয়ে সমস্ত রকম আন্দোলন থেকে সরে আসে। তার মধ্যে বিনয় তামাং, অনীত থাপারা রয়েছেন। বিমল–রোশন সহ বেশ কয়েকজন রাজ্য বিরোধিতাতেই অনড় থাকেন। দেড় বছরের বেশি সময় থেকে পাহাড় ছাড়া রয়েছেন রোশন গিরি, বিমল গুরুং-সহ আরও বেশ কিছু গুরুং অনুগামী মোর্চা নেতা। তাঁদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি লুক আউট নোটিসও জারি করেছে রাজ্য সরকার।
[ আরও পড়ুন: তৃণমূলের পার্টি অফিস পুনর্দখল, ঝাট দিয়ে ঘর পরিষ্কার করলেন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা]
এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে ফেরার চেষ্টা করলেও, তা ফলপ্রসূ হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেও সাড়া মেলেনি। ফের মামলাটি হাই কোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাহাড়বাসীর অধিকাংশেরই দাবি মোর্চার ভাঙন এবং আন্দোলন করার মধ্যে এবং বিমল, বিনয়ের মধ্যে ফাটল তৈরি করা অন্যতম কারিগর রোশন গিরি। অশান্তির সময়ে টানা দিল্লিতে বসে মধ্যস্ততা করার চেষ্টা অনেকেই পছন্দ করেননি। ফলে রাজনৈতিক পালাবদলেও রোশন গিরির পাহাড়ে ফেরার ভবিষ্যৎ বিশ বাঁও জলে।
The post গুরুংয়ের নেতৃত্ব স্বীকার করলেও, রোশন গিরিকে দূরেই ঠেলে দিচ্ছেন পাহাড়বাসী appeared first on Sangbad Pratidin.
